Wednesday, June 17, 2015

আল–কায়েদার দ্বিতীয় নেতা বুয়াইশি নিহত:প্রথম অালো

যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় এবার নিহত হলেন জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার ইয়েমেন শাখার প্রধান নাসের আল-বুয়াইশি। গত শুক্রবার তিনি ইয়েমেনে মারা যান। আল-কায়েদা ও যুক্তরাষ্ট্র গতকাল মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করে। আল-বুইয়াশিকে আল-কায়েদার দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা হিসেবে ধরা হতো। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বুয়াইশির মৃত্যু জঙ্গি সংগঠনটির ওপর বড় আঘাত। খবর এএফপি ও বিবিসির। এর আগে গত সোমবার লিবিয়ার সরকার জানায়, আল-কা
য়েদাসংশ্লিষ্ট একটি দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা মোখতার বেলমোখতার যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। বেলমোখতার আল-কায়েদা ইন ইসলামি মাগরেবের (একিউআইএম) জ্যেষ্ঠ সদস্য ছিলেন। দল ভেঙে পরে আল-কায়েদাসংশ্লিষ্ট উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার জঙ্গি সংগঠন আল মুরাবাইতউনের নেতা হন। আল-কায়েদা ইন অ্যারাবিয়ান পেনিনসুলার (একিউএপি) সদস্য খালেদ বাতারফি গতকাল মঙ্গলবার এক ঘোষণায় আল-বুয়াইশির নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেন। অনলাইনে পাঠানো ভিডিওতে বাতারফি জানান, আল-বুয়াইশির সঙ্গে আরও দুজন ইসলামি জঙ্গি নিহত হয়েছেন। সংগঠনটির নতুন প্রধান হিসেবে সামরিক শাখার সাবেক প্রধান কাসিম আল-রেমিকে নিযুক্ত করা হয়েছে বলেও জানান বাতারফি। একিউএপি অবশ্য পরিষ্কার করে বলেনি যে কখন ও কীভাবে আল-বুয়াইশির মৃত্যু হয়। তবে ইয়েমেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর মুকালার কয়েকজন বাসিন্দা একটি ড্রোন হামলার কথা জানিয়েছেন। আর কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নামাজ শেষে শহরের সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় তাঁরা যখন আড্ডা দিচ্ছিলেন, তখন একটি বিস্ফোরণে তিনজনের মৃত্যু হয়। তাঁদের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে রাস্তায় পড়ে। এ সময় আতঙ্কিত মানুষ পালিয়ে যায়। এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আল-কায়েদার জঙ্গিরা এলাকাটি ঘিরে ফেলে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, এ ঘটনায় তাঁদের এমন বিশ্বাস হয়েছে যে নিহত তিনজন জঙ্গি সংগঠনেরই ছিলেন। আল-বুয়াইশিকে নিয়ে এ বছর মার্কিন হামলায় একিউএপির ছয়জন বড় নেতা নিহত হলেন। বুয়াইশি আল-কায়েদার প্রয়াত প্রধান ওসামা বিন লাদেনের ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন। বর্তমানে সংগঠনের শীর্ষ নেতা আইমান আল-জাওয়াহিরির পরে তাঁকে দ্বিতীয় নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হতো। গত জানুয়ারিতে ফরাসি রম্য সাময়িকী শার্লে এবদোর কার্যালয়ে হামলার দায় স্বীকার করে একিউএপি। সাম্প্রতিক সময়ে ইয়েমেনে বেশ কিছু বড় হামলা চালায় জঙ্গি গোষ্ঠীটি। সরকারি দপ্তর, সেনা ক্যাম্প এবং সেনাসদস্যরা এসব হামলার শিকার হন। হামলায় কয়েক শ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। একিউএপির ওপর গ্রেগরি জনসনের লেখা বই অনুসারে, আল-বুয়াইশির জন্ম ইয়েমেনে। ১৯৯৮ সালে আল-কায়েদায় যোগ দিতে তিনি আফগানিস্তানে যান। সেখানে তিনি ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। একপর্যায়ে তাঁর ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি আফগানিস্তানেই ছিলেন। ১১ সেপ্টেম্বরে টুইন টাওয়ারে হামলার পর আল-কায়েদার বিরুদ্ধে মার্কিন অভিযান শুরু হলে বুয়াইশি ইয়েমেনে চলে আসেন। সেখানে তাঁকে আটক করা হলে ২০০৬ সালে জেল ভেঙে পালিয়ে যান। ২০০৯ সালে তিনি একিউএপির প্রধান হন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এই জঙ্গি নেতাকে ধরিয়ে দিতে এক কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।

No comments:

Post a Comment