Saturday, July 19, 2014

৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিঃসন্দেহে ত্রুটিপূর্ণ ছিল : নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত:নয়াদিগন্ত

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা ও মানবাধিকার পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। তাদের মতে, ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন নিঃসন্দেহে ত্রুটিপূর্ণ ছিল। একটি অধিকতর প্রতিনিধিত্বমূলক সরকারের জন্য বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে জরুরিভিত্তিতে গঠনমূলক সংলাপে বসা প্রয়োজন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত মারিয়া স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকট গতকাল পররাষ্ট্রবিষয়ক মার্কিন সিনেট কমিটিতে দেয়া বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে বার্নিকট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন ক্যারির মনোনয়ন পেয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী এই মনোনয়নে সিনেটের অনুমোদন দরকার হয়। সঙ্কটপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককালীন বাংলাদেশের মতো একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ দেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করতে মনোনয়ন পেয়ে সম্মানবোধ করছেন উল্লেখ করে বার্নিকট বলেন, ‘ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ, রাজনৈতিক সহিংসতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আমার মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, মানবাধিকারকে শক্তিশালী করা এবং গণতন্ত্রকে সমর্থন দিতে কঠোর পরিশ্রম করব।’ তিনি বলেন, ব্যাপকভিত্তিক ও সুষ্ঠু অংশগ্রহণের জন্য পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমি সরকার, সুশীলসমাজ ও বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের সাথে কাজ করব। বহু মত ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, নাগরিক সমাজের বিকাশের সুযোগ, সহিংসতা থেকে দূরে থেকে মুক্ত ও শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক বিরোধ নিষ্পত্তির উপায় খুঁজে বের করা এবং একটি স্বাধীন বিচারব্যবস্থা কর্তৃক আইনের শাসন নিশ্চিত করাসহ শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখতে আমি উৎসাহ দিয়ে যাবো। বার্নিকট বলেন, ১৯৭১ সালে যারা অপরাধ করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনাকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে, তবে এ বিচার হতে হবে সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। নাগরিক সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারা ও অবাধে মত প্রকাশ করাকে আমরা সমর্থন দেবো। এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গণতন্ত্রের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যকারিতা এবং প্রশাসনিক কাঠামো অক্ষুণœ রাখতে আমরা সরকারকে উৎসাহিত করব। সন্ত্রাস দমন, সমুদ্রের নিরাপত্তা, শান্তিরক্ষী ও অবৈধ মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানরোধসহ সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করতে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া সহায়তাকে আমি এগিয়ে নিয়ে যাব। তিনি বলেন, বাংলাদেশে শ্রমিক অধিকার ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বাংলাদেশে রানাপ্লাজা ভবন ধস বা তাজরীন ফ্যাশনসের মতো অগ্নিকাণ্ডের মতো ট্র্যাজেডি যাতে আর না ঘটে তা যুক্তরাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে। বার্নিকট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেকোনো মিশন প্রধানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। বিগত জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে মার্কিন দূতাবাস এ লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিল। রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে এটি আমার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে থাকবে।

No comments:

Post a Comment