লাশের সন্ধানে তারা চিৎকার করে কান্নাকাটি করছেন। ধারণমতার আড়াইগুণের বেশি প্রায় আড়াই শ’ যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি পদ্মার কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে মাওয়া ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। মাওয়া লঞ্চ ঘাটের সামান্য দূরে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। আড়াই শ’ যাত্রীর মধ্যে এক শ’ যাত্রী প্রাণে বেঁচে যান। এখনো নিখোঁজ আছেন প্রায় দেড় শ’ যাত্রী। ঘটনার পরপরই দুইজনের লাশ উদ্ধার হয়। পরে আহত অবস্থায় আরো চার যাত্রীকে উদ্ধার করা হয় পরে তার মারা যান। উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের মধ্যে ১২ জনকে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন মাদারীপুর শিবচরের নুসরাত জাহান হীরা আক্তার (২০) সিকদার মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী, ফরিদপুরের ভাঙ্গার আবদুল আজিজ (৪৫), একই এলাকার কমল মণ্ডল (২২), মাদারীপুরের বাতেন আলী (৪৫) এবং শিবচরের গার্মেন্ট কর্মী আনোয়ার হোসেন (২৫)। বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, পিনাক-৬ লঞ্চটির সর্বোচ্চ ধারণমতা ১১৫ জন। এই লঞ্চটির মালিক মাওয়া এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিক কালু মিয়া। ঈদে ঢাকামুখী মানুষের চাপের কারণে লঞ্চে প্রায় আড়াই শ’ যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি মাওয়া লঞ্চঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছেন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খন্দকারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও বিআইডব্লিউটিএর ডুবুরিরা ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে লাশ উদ্ধারে নামে। কিন্তু প্রবল স্রোতের কারণে তারা পানির নিচে লঞ্চ পর্যন্ত যেতে পারেননি। ডুবুরিরা স্পিডবোট নিয়ে ঘটনাস্থলে লাশের সন্ধান করছে। উদ্ধার কাজ চালাতে বিআইডব্লিউটির উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা বরিশাল থেকে রওনা দিয়েছে। আরেক উদ্ধারকারী জাহাজ এমভি রুস্তম নারায়ণগঞ্জ থেকে রওনা দিয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খন্দকার জানান, ডুবরিরা লাশের সন্ধান করছে। তবে প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। মঙ্গলবার ভোর থেকে ভাটির দিক থেকে লাশ উদ্ধার করা হতে পারে। ঘটনার পরপর মাওয়া লঞ্চঘাটে নিখোঁজদের স্বজনরা ভিড় করতে থাকেন। তাদের আহাজারি আর কান্নায় সেখানে এক হƒদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। একজন আরেকজনকে জড়িয়ে চিৎকার করতে থাকেন তারা। কেউ বুক চাপড়িয়ে মাটিতে গড়াগড়ি করছেন। লঞ্চঘাটে বিআইডব্লিউটিএ, মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপার কার্যালয় ক্যাম্প খুলেছে। লৌহজং থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন জানান, বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রায় ৬০ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে তালিকা করা হয়েছে। নিখোঁজদের স্বজনরা ভিড় করছেন ক্যাম্পে। কেউ তার ভাই, কেউ বা তার স্ত্রী আবার কেউ বা পরিবারের মা-বাবা, ভাই-বোন নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাদের নাম তালিকাভুক্ত করছেন। যেভাবে লঞ্চ ডুবে যায় : প্রত্যদর্শী লঞ্চের যাত্রী রিপন মিয়া জানান, ফরিদপুরের ভাঙ্গায় শ^শুরবাড়িতে সপরিবারে ঈদ উদযাপন করতে গিয়েছিলেন। গতকাল ঢাকায় ফেরার জন্য কাওরাকান্দি ঘাট থেকে এমএল পিনাক-৬ লঞ্চে ওঠেন। সাথে তার স্ত্রী সীমা ও ছয় মাসের সন্তান জান্নাত। ঈদে ঢাকামুখী মানুষের কারণে লঞ্চে যাত্রী ছিল ঠাসাঠাসি। লঞ্চটি মাওয়াঘাটের কাছাকাছি আসার সময় যাত্রীরা নামার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বেশির ভাগ যাত্রী লঞ্চের ডেকের এক দিকে অবস্থান নেয়। এ সময় প্রচণ্ড জোরে বাতাস বইছিল। লঞ্চের সামনের দিক থেকে একটি বড় ঢেউ এসে ভেতরে আছড়ে পড়ে। এতে লঞ্চের ভেতর পানিতে ভেসে যায়। একপর্যায়ে যে দিকে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে ছিলেন, লঞ্চের ওই দিক হেলে পড়ে। তখন চার দিকে চিৎকার, হাউমাউ কান্নার শোরগোল পড়ে যায়। তার স্ত্রীর কোলে জান্নাত ছিল। স্ত্রী তলিয়ে গেল। তার ওপর আরো পাঁচ-ছয়জন মানুষ পড়ে গেল। তিনি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর সাঁতরিয়ে ওঠেন। তীরে এসে খুঁজতে থাকেন তার স্ত্রী ও জান্নাতকে। অনেকণ পর দেখেন তীরে সীমা বুক চাপড়িয়ে কান্নাকাটি করছেন। পানিতে ডুবে যাওয়ার সময় সীমার কোল থেকে জান্নাত ছিটকে পড়ে। জান্নাতকে তিনি আর খুঁজে পাচ্ছেন না। বেঁচে যাওয়া ১২ বছরের আরেক সীমা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, তার বাবা-মা ও ভাই-বোন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের বাড়ি মাদারীপুরের শিবপুরের চাঁন্দেরচর গ্রামে। তার কান্নাকাটি দেখে ঘাটের ক্যাম্পের পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। এই শিশু এখন কী করবে তা বুঝতে পারছে না। সীমা জানায়, লঞ্চ ডুবে যাওয়ার সময় সে তার মাকে জড়িয়ে ধরেছিল। কিন্তু পানির মধ্যে হাবুডুবু খাওয়ার সময় কে বা কারা তাকে টেনে একটি ট্রলারে তোলে। কিন্তু বাবা-মা, ভাই-বোনের খোঁজ পায়নি। তারা বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন তা-ও সে জানে না। বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের মধ্যে রুবেল জানান, মাদারীপুরের শিবচরের কাদিরপুরে তার বাড়ি। ঈদ শেষে দুই বোন, দুই ভাগ্নে-ভাগ্নিসহ তারা ঢাকায় যাওয়ার জন্য ওই লঞ্চে ওঠেন। লঞ্চ ডুবে যাওয়ার সময় তিনি দোতলায় ছিলেন। পরে তার এক বোন ও ভাগ্নি উদ্ধার হলেও ছোট বোন ফালানি এবং ভাগ্নি এখনো নিখোঁজ। দুর্ঘটনাস্থল : মাওয়া লঞ্চঘাট থেকে এক কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীর মিডপয়েন্টে এই লঞ্চটি ডুবেছে। বিআইডব্লিউটিএর সূত্র মতে নদীর এই পয়েন্টটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে ডুবোচরে প্রায়ই লঞ্চ আটকে যায়। এই কারণে এই এলাকা দিয়ে বেশির ভাগ লঞ্চ ঘাটে ভেড়ে না। কিন্তু ঘটনার সময় প্রত্যদর্শীরা জানিয়েছেন, লঞ্চটি তড়িঘড়ি করে ঘাটে ভেড়ানোর জন্য হয়তো চালক এই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা দিয়ে লঞ্চ চালিয়েছিলেন। বিআইডব্লিউটিএর অপর একটি সূত্র জানায়, প্রচণ্ড বাতাস ও স্রোতের কারণে লঞ্চটি দিক থেকে সরে গিয়ে এই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আসে। ফায়ার সার্ভিস ঢাকা বিভাগের সহকারী পরিচালক মাসুদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩০ জন সদস্য উদ্ধারকাজে নিয়োজিত হয়। ছয়জন ডুবুরি পানিতে লাশের সন্ধান করতে থাকে। কিন্তু তাৎণিকভাবে মাত্র দুইটি লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। ঘটনার সময় মাওয়া ঘাট থেকে ট্রলার ও স্পিডবোটে করে লোকজন গিয়ে ডুবে যাওয়া যাত্রীদের উদ্ধার করে। নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, লঞ্চে প্রায় ২৫০ যাত্রী ছিল। তবে এই ধরনের লঞ্চে এটি অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও প্রচণ্ড স্রোতের কারণেই লঞ্চটি ডুবে গেছে। তদন্ত কমিটি : ঘটনার তদন্তে দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (টাস্কফোর্স) নূর-উর-রহমানকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেনÑ বুয়েটের একজন প্রতিনিধি, বিআইডব্লিউটিএর সদস্য (প্রকৌশল), বিআইডব্লিউটিসির প্রধান প্রকৌশলী, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের চিফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার, মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক। কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর ওই অধিদফতরের ইঞ্জিনিয়ার ও শিপ সার্ভেয়ার নাজমুল হককে প্রধান করে চার সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেনÑ সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন, মেরিন সেফটির বিশেষ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও মুখ্য পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম। এই কমিটিকেও ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। নিহতের পরিবারকে অনুদানের ঘোষণা : লঞ্চডুবির ঘটনায় প্রত্যেক নিহতের জন্য তাদের পরিবারকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া লাশ পরিবহনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। লঞ্চডুবির ঘটনায় গঠিত মুন্সীগঞ্জে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যে দুইজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার পরিবারের কাছে লাশ ও ২০ হাজার টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রশাসনের নিখোঁজ তালিকা : লঞ্চডুবির ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ৮৭ জন নিখোঁজ যাত্রীর তালিকা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এখনো বাড়ছে নিখোঁজের তালিকা। এ দিকে নিখোঁজ যাত্রীদের তালিকা তৈরি করতে স্থানীয় প্রশাসন মাওয়া ঘাটে পদ্মার তীরে তাবু টাঙিয়ে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ যুব রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি জেলা ইউনিট, বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, শ্রীনগর ও লৌহজং থানা পুলিশ এবং উপজেলা প্রশাসন পৃথকভাবে মৃতের তালিকা, নিখোঁজের তালিকা ও উদ্ধারের তালিকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রশাসনের হিসাব অনুয়ায়ী নিখোঁজ যাত্রীরা হলেন, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বন্দরখোলার মিজানুর রহমান (৩৫), তার স্ত্রী রোখসানা (৩০), মেয়ে মিলি, ছেলে মাইনুল, মীম (১৫), গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর উপজেলার পলি (২৮) ও তার মেয়ে মেঘলা (সাড়ে ছয় বছর), মিজানুর রহমান, আরমিন (১৬), আরফিন (১৭), ইমতিয়াজ রহমান, আয়শা আক্তার ও তার মেয়ে সারা, সাদিয়া (৯), ফালানি বেগম, দিপা আক্তার (১৩), রাবিব (১২), হানিফ (আড়াই বছর), মেরি, রবিউলসহ মোট ৮৭ জন। শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মাহবুবুর রহমান জানান, নিখোঁজ যাত্রীদের তালিকা তৈরি হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত তালিকা বড় হচ্ছে। দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চটিতে ২৫০ থেকে ২৭৫ যাত্রী ছিল ধারণা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। ৯টা ৪০ মিনিটে ৩টি উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম, দুরন্ত ও সন্ধানী দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁচেছে। ফরিদপুরের একই পরিবারের ৭ জন নিখোঁজ ফরিদপুর অফিস জানায়, মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে ডুবে যাওয়া পিনাক-৬ লঞ্চের নিখোঁজ যাত্রীদের মধ্যে একই পরিবারের সাতজন যাত্রী ছিলেন ফরিদপুরের। তারা হলেন ফরিদা আক্তার সীমু, তার স্বামী মো: রুবেল, বড় মেয়ে ফাইজা ছোট মেয়ে ফাতেহা, সোবাহান মাতুব্বর, তার স্ত্রী জিয়াসমিন আক্তার ও সন্তান ইভান। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাত সাড়ে ৮টায় নিখোঁজ এসব যাত্রীর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় কাওড়াকান্দি থেকে মাওয়ার উদ্দেশে পিনাক-৬ নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ মাওয়াঘাট থেকে ১০০ গজ দূরে লৌহজং চ্যালেনে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া লঞ্চটিতে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার সাতরশি গ্রামের একই পরিবারের সাতজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের চারটি মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে যখন তারা লঞ্চে উঠেছিলেন তখন বাড়ির লোকজনকে জানিয়েছিলেন। বর্তমানে তাদের চারটি মোবাইল ফোনই বন্ধ পেয়ে নিখোঁজ স্বজনদের পরিবারে আতঙ্ক বিরাজ করার পাশাপাশি স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। তাদের সন্ধানে পরিবারের সাথে লোকজনসহ এলাকার অনেকে ছুটে গেছেন মুন্সীগঞ্জে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা ডুবে যাওয়া লঞ্চটিতে ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Tuesday, August 5, 2014
আড়াই শ’ যাত্রী নিয়ে পদ্মায় লঞ্চডুবি:নয়াদিগন্ত
লাশের সন্ধানে তারা চিৎকার করে কান্নাকাটি করছেন। ধারণমতার আড়াইগুণের বেশি প্রায় আড়াই শ’ যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি পদ্মার কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে মাওয়া ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। মাওয়া লঞ্চ ঘাটের সামান্য দূরে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। আড়াই শ’ যাত্রীর মধ্যে এক শ’ যাত্রী প্রাণে বেঁচে যান। এখনো নিখোঁজ আছেন প্রায় দেড় শ’ যাত্রী। ঘটনার পরপরই দুইজনের লাশ উদ্ধার হয়। পরে আহত অবস্থায় আরো চার যাত্রীকে উদ্ধার করা হয় পরে তার মারা যান। উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের মধ্যে ১২ জনকে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন মাদারীপুর শিবচরের নুসরাত জাহান হীরা আক্তার (২০) সিকদার মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী, ফরিদপুরের ভাঙ্গার আবদুল আজিজ (৪৫), একই এলাকার কমল মণ্ডল (২২), মাদারীপুরের বাতেন আলী (৪৫) এবং শিবচরের গার্মেন্ট কর্মী আনোয়ার হোসেন (২৫)। বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, পিনাক-৬ লঞ্চটির সর্বোচ্চ ধারণমতা ১১৫ জন। এই লঞ্চটির মালিক মাওয়া এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিক কালু মিয়া। ঈদে ঢাকামুখী মানুষের চাপের কারণে লঞ্চে প্রায় আড়াই শ’ যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি মাওয়া লঞ্চঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছেন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খন্দকারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও বিআইডব্লিউটিএর ডুবুরিরা ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে লাশ উদ্ধারে নামে। কিন্তু প্রবল স্রোতের কারণে তারা পানির নিচে লঞ্চ পর্যন্ত যেতে পারেননি। ডুবুরিরা স্পিডবোট নিয়ে ঘটনাস্থলে লাশের সন্ধান করছে। উদ্ধার কাজ চালাতে বিআইডব্লিউটির উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা বরিশাল থেকে রওনা দিয়েছে। আরেক উদ্ধারকারী জাহাজ এমভি রুস্তম নারায়ণগঞ্জ থেকে রওনা দিয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খন্দকার জানান, ডুবরিরা লাশের সন্ধান করছে। তবে প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। মঙ্গলবার ভোর থেকে ভাটির দিক থেকে লাশ উদ্ধার করা হতে পারে। ঘটনার পরপর মাওয়া লঞ্চঘাটে নিখোঁজদের স্বজনরা ভিড় করতে থাকেন। তাদের আহাজারি আর কান্নায় সেখানে এক হƒদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। একজন আরেকজনকে জড়িয়ে চিৎকার করতে থাকেন তারা। কেউ বুক চাপড়িয়ে মাটিতে গড়াগড়ি করছেন। লঞ্চঘাটে বিআইডব্লিউটিএ, মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপার কার্যালয় ক্যাম্প খুলেছে। লৌহজং থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন জানান, বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রায় ৬০ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে তালিকা করা হয়েছে। নিখোঁজদের স্বজনরা ভিড় করছেন ক্যাম্পে। কেউ তার ভাই, কেউ বা তার স্ত্রী আবার কেউ বা পরিবারের মা-বাবা, ভাই-বোন নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাদের নাম তালিকাভুক্ত করছেন। যেভাবে লঞ্চ ডুবে যায় : প্রত্যদর্শী লঞ্চের যাত্রী রিপন মিয়া জানান, ফরিদপুরের ভাঙ্গায় শ^শুরবাড়িতে সপরিবারে ঈদ উদযাপন করতে গিয়েছিলেন। গতকাল ঢাকায় ফেরার জন্য কাওরাকান্দি ঘাট থেকে এমএল পিনাক-৬ লঞ্চে ওঠেন। সাথে তার স্ত্রী সীমা ও ছয় মাসের সন্তান জান্নাত। ঈদে ঢাকামুখী মানুষের কারণে লঞ্চে যাত্রী ছিল ঠাসাঠাসি। লঞ্চটি মাওয়াঘাটের কাছাকাছি আসার সময় যাত্রীরা নামার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বেশির ভাগ যাত্রী লঞ্চের ডেকের এক দিকে অবস্থান নেয়। এ সময় প্রচণ্ড জোরে বাতাস বইছিল। লঞ্চের সামনের দিক থেকে একটি বড় ঢেউ এসে ভেতরে আছড়ে পড়ে। এতে লঞ্চের ভেতর পানিতে ভেসে যায়। একপর্যায়ে যে দিকে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে ছিলেন, লঞ্চের ওই দিক হেলে পড়ে। তখন চার দিকে চিৎকার, হাউমাউ কান্নার শোরগোল পড়ে যায়। তার স্ত্রীর কোলে জান্নাত ছিল। স্ত্রী তলিয়ে গেল। তার ওপর আরো পাঁচ-ছয়জন মানুষ পড়ে গেল। তিনি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর সাঁতরিয়ে ওঠেন। তীরে এসে খুঁজতে থাকেন তার স্ত্রী ও জান্নাতকে। অনেকণ পর দেখেন তীরে সীমা বুক চাপড়িয়ে কান্নাকাটি করছেন। পানিতে ডুবে যাওয়ার সময় সীমার কোল থেকে জান্নাত ছিটকে পড়ে। জান্নাতকে তিনি আর খুঁজে পাচ্ছেন না। বেঁচে যাওয়া ১২ বছরের আরেক সীমা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, তার বাবা-মা ও ভাই-বোন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের বাড়ি মাদারীপুরের শিবপুরের চাঁন্দেরচর গ্রামে। তার কান্নাকাটি দেখে ঘাটের ক্যাম্পের পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। এই শিশু এখন কী করবে তা বুঝতে পারছে না। সীমা জানায়, লঞ্চ ডুবে যাওয়ার সময় সে তার মাকে জড়িয়ে ধরেছিল। কিন্তু পানির মধ্যে হাবুডুবু খাওয়ার সময় কে বা কারা তাকে টেনে একটি ট্রলারে তোলে। কিন্তু বাবা-মা, ভাই-বোনের খোঁজ পায়নি। তারা বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন তা-ও সে জানে না। বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের মধ্যে রুবেল জানান, মাদারীপুরের শিবচরের কাদিরপুরে তার বাড়ি। ঈদ শেষে দুই বোন, দুই ভাগ্নে-ভাগ্নিসহ তারা ঢাকায় যাওয়ার জন্য ওই লঞ্চে ওঠেন। লঞ্চ ডুবে যাওয়ার সময় তিনি দোতলায় ছিলেন। পরে তার এক বোন ও ভাগ্নি উদ্ধার হলেও ছোট বোন ফালানি এবং ভাগ্নি এখনো নিখোঁজ। দুর্ঘটনাস্থল : মাওয়া লঞ্চঘাট থেকে এক কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীর মিডপয়েন্টে এই লঞ্চটি ডুবেছে। বিআইডব্লিউটিএর সূত্র মতে নদীর এই পয়েন্টটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে ডুবোচরে প্রায়ই লঞ্চ আটকে যায়। এই কারণে এই এলাকা দিয়ে বেশির ভাগ লঞ্চ ঘাটে ভেড়ে না। কিন্তু ঘটনার সময় প্রত্যদর্শীরা জানিয়েছেন, লঞ্চটি তড়িঘড়ি করে ঘাটে ভেড়ানোর জন্য হয়তো চালক এই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা দিয়ে লঞ্চ চালিয়েছিলেন। বিআইডব্লিউটিএর অপর একটি সূত্র জানায়, প্রচণ্ড বাতাস ও স্রোতের কারণে লঞ্চটি দিক থেকে সরে গিয়ে এই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আসে। ফায়ার সার্ভিস ঢাকা বিভাগের সহকারী পরিচালক মাসুদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩০ জন সদস্য উদ্ধারকাজে নিয়োজিত হয়। ছয়জন ডুবুরি পানিতে লাশের সন্ধান করতে থাকে। কিন্তু তাৎণিকভাবে মাত্র দুইটি লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। ঘটনার সময় মাওয়া ঘাট থেকে ট্রলার ও স্পিডবোটে করে লোকজন গিয়ে ডুবে যাওয়া যাত্রীদের উদ্ধার করে। নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, লঞ্চে প্রায় ২৫০ যাত্রী ছিল। তবে এই ধরনের লঞ্চে এটি অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও প্রচণ্ড স্রোতের কারণেই লঞ্চটি ডুবে গেছে। তদন্ত কমিটি : ঘটনার তদন্তে দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (টাস্কফোর্স) নূর-উর-রহমানকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেনÑ বুয়েটের একজন প্রতিনিধি, বিআইডব্লিউটিএর সদস্য (প্রকৌশল), বিআইডব্লিউটিসির প্রধান প্রকৌশলী, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের চিফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার, মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক। কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর ওই অধিদফতরের ইঞ্জিনিয়ার ও শিপ সার্ভেয়ার নাজমুল হককে প্রধান করে চার সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেনÑ সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন, মেরিন সেফটির বিশেষ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও মুখ্য পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম। এই কমিটিকেও ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। নিহতের পরিবারকে অনুদানের ঘোষণা : লঞ্চডুবির ঘটনায় প্রত্যেক নিহতের জন্য তাদের পরিবারকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া লাশ পরিবহনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। লঞ্চডুবির ঘটনায় গঠিত মুন্সীগঞ্জে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যে দুইজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার পরিবারের কাছে লাশ ও ২০ হাজার টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রশাসনের নিখোঁজ তালিকা : লঞ্চডুবির ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ৮৭ জন নিখোঁজ যাত্রীর তালিকা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এখনো বাড়ছে নিখোঁজের তালিকা। এ দিকে নিখোঁজ যাত্রীদের তালিকা তৈরি করতে স্থানীয় প্রশাসন মাওয়া ঘাটে পদ্মার তীরে তাবু টাঙিয়ে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ যুব রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি জেলা ইউনিট, বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, শ্রীনগর ও লৌহজং থানা পুলিশ এবং উপজেলা প্রশাসন পৃথকভাবে মৃতের তালিকা, নিখোঁজের তালিকা ও উদ্ধারের তালিকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রশাসনের হিসাব অনুয়ায়ী নিখোঁজ যাত্রীরা হলেন, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বন্দরখোলার মিজানুর রহমান (৩৫), তার স্ত্রী রোখসানা (৩০), মেয়ে মিলি, ছেলে মাইনুল, মীম (১৫), গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর উপজেলার পলি (২৮) ও তার মেয়ে মেঘলা (সাড়ে ছয় বছর), মিজানুর রহমান, আরমিন (১৬), আরফিন (১৭), ইমতিয়াজ রহমান, আয়শা আক্তার ও তার মেয়ে সারা, সাদিয়া (৯), ফালানি বেগম, দিপা আক্তার (১৩), রাবিব (১২), হানিফ (আড়াই বছর), মেরি, রবিউলসহ মোট ৮৭ জন। শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মাহবুবুর রহমান জানান, নিখোঁজ যাত্রীদের তালিকা তৈরি হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত তালিকা বড় হচ্ছে। দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চটিতে ২৫০ থেকে ২৭৫ যাত্রী ছিল ধারণা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। ৯টা ৪০ মিনিটে ৩টি উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম, দুরন্ত ও সন্ধানী দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁচেছে। ফরিদপুরের একই পরিবারের ৭ জন নিখোঁজ ফরিদপুর অফিস জানায়, মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে ডুবে যাওয়া পিনাক-৬ লঞ্চের নিখোঁজ যাত্রীদের মধ্যে একই পরিবারের সাতজন যাত্রী ছিলেন ফরিদপুরের। তারা হলেন ফরিদা আক্তার সীমু, তার স্বামী মো: রুবেল, বড় মেয়ে ফাইজা ছোট মেয়ে ফাতেহা, সোবাহান মাতুব্বর, তার স্ত্রী জিয়াসমিন আক্তার ও সন্তান ইভান। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাত সাড়ে ৮টায় নিখোঁজ এসব যাত্রীর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় কাওড়াকান্দি থেকে মাওয়ার উদ্দেশে পিনাক-৬ নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ মাওয়াঘাট থেকে ১০০ গজ দূরে লৌহজং চ্যালেনে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া লঞ্চটিতে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার সাতরশি গ্রামের একই পরিবারের সাতজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের চারটি মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে যখন তারা লঞ্চে উঠেছিলেন তখন বাড়ির লোকজনকে জানিয়েছিলেন। বর্তমানে তাদের চারটি মোবাইল ফোনই বন্ধ পেয়ে নিখোঁজ স্বজনদের পরিবারে আতঙ্ক বিরাজ করার পাশাপাশি স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। তাদের সন্ধানে পরিবারের সাথে লোকজনসহ এলাকার অনেকে ছুটে গেছেন মুন্সীগঞ্জে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা ডুবে যাওয়া লঞ্চটিতে ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment