Tuesday, August 5, 2014

পদ্মার তীরে আহাজারি:যুগান্তর

ঢাকার অদূরে মাওয়ায় পদ্মা নদীতে সোমবার প্রায় তিনশ’ যাত্রী নিয়ে ডুবে গেছে যাত্রীবাহী লঞ্চ। এ ঘটনায় সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও শতাধিক ব্যক্তির প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। কাওড়াকান্দিঘাট থেকে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে সোমবার মাওয়াঘাটে আসছিল এমভি পিনাক-৬। বেলা ১১টার দিকে মাওয়াঘাটের অদূরে তীব্র স্রোত ও ঢেউয়ের তোড়ে ডুবে যায় লঞ্চটি। দুপুর পর্যন্ত ১২৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। রাত সাড়ে
৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হাজারও মানুষ মাওয়া ও কাওড়াকান্দিঘাটে স্বজনের খোঁজে ঘুরছিলেন। হাতে ছবি নিয়ে বুকফাটা কান্না আর আহাজারিতে ভারি হয়েছিল মাওয়াঘাটের বাতাস। লঞ্চের সন্ধানে ইকো সাউন্ডার প্রযুক্তি ব্যবহার করেও রাত ৯টা পর্যন্ত লঞ্চের সন্ধান পাওয়া যায়নি। রাত ১০টার দিকে উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সন্ধ্যার পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় উদ্ধার কাজ। ডুবে যাওয়া লঞ্চটির অবস্থান তখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। আর এর আগে থেকেই অপেক্ষা ছিল উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তমের আগমনের। সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে রওনা দেয়া এ জাহাজটির অবস্থান এ প্রতিবেদন লেখার সময় ছিল চাঁদপুরে। মধ্যরাতে এটি ঘটনাস্থলে পৌঁছার কথা। এরপর আবারও শুরু হওয়ার কথা উদ্ধার তৎপরতা। লঞ্চডুবির ঘটনা তদন্তে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফিটনেস ছিল না এমভি পিনাক ৬-এর। এপ্রিলে শেষ হয় এর ফিটনেস মেয়াদ। যাত্রী ধারণক্ষমতা ছিল ৮৬ জন। অথচ এদিন এটি যাত্রী বহন করছিল প্রায় ৩০০। শ্রীনগর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান যুগান্তরকে জানান, মাওয়াঘাটের কাছে নদীর টার্নিং পয়েন্টে লঞ্চটি ডুবে যায়। ওই এলাকায় তীব্র স্রোত ও প্রচণ্ড ঢেউ রয়েছে। দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১২৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তারা ৮৭ জন নিখোঁজ ব্যক্তির নাম তালিকাভুক্ত করেছেন। নিখোঁজদের অধিকাংশের বাড়ি মাদারীপুরের শিবচর, বরিশালের উজিরপুর, গোপালগঞ্জের মুকসেদপুর, কাশিয়ানী ও ফরিদপুর জেলায়। বেলা ১টায় দুজনের ও পরে বিকাল ৫টায় আরও ৩ জনেরসহ মোট ৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মাহবুবুর রহমান জানান, দুপুরে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের একজনের পরিচয় মিলেছে। তিনি হলেন শিবচরের নূরুল হকের ছেলে হীরা (২০)। অন্যজন আনুমানিক ৪০ বছরের মহিলা। এদের লাশ শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। পরে উদ্ধারকৃতদের লাশ মাওয়াঘাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের সামনে রাখা হয়। মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল হাসান জানান, লঞ্চটিতে প্রায় আড়াইশ’ যাত্রী ছিল। উদ্ধার কাজে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, ফায়ার ব্রিগেড ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দল, লৌহজং ও শ্রীনগর থানা পুলিশ এবং বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্টরা কাজ শুরু করছেন। জেলা প্রশাসক আরও জানান, নিহতদের দাফন ও লাশ পরিবহনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা দেয়া হচ্ছে। উদ্ধার অভিযানে অংশ নিতে র‌্যাব হেলিকপ্টার ও ডুবুরি পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান। মাওয়াঘাট লঞ্চ মালিক সমিতির নেতা ইকবাল হোসেন জানান, লঞ্চে প্রায় আড়াইশ’ যাত্রী ছিল। ঈদের ছুটির পর হওয়ায় লঞ্চটিতে ধারণ ক্ষমতার কিছু বেশি যাত্রী ছিল বলে তিনি স্বীকার করেছেন। লঞ্চ থেকে উদ্ধার হওয়া যাত্রী শিবচরের মোঃ সোহেল জানান, লঞ্চে তিন শতাধিক যাত্রী ছিল। অতিরিক্ত লোক নেয়ায় উত্তাল নদীতে লঞ্চটি ডুবে যায় বলে দাবি টুটুলের। উদ্ধার হওয়া যাত্রী ঢাকার রায়েরবাজারের মোতালেব হোসেন জানান, তীব্র ঢেউ ও স্রোতের টানে মাওয়াঘাটের প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে লঞ্চটি ডুবে যায়। লঞ্চটি ঢেউয়ে দুলতে থাকলে যাত্রীরা একপাশে চলে যান। এতে কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই লঞ্চটি প্রথমে একদিকে কাত হয়ে ও পরে সম্পূর্ণ তলিয়ে যায়। তিনি কিছুক্ষণ সাঁতরে ভেসে থাকার পর একটি ট্রলার তাকে উদ্ধার করে। লঞ্চডুবির পর ফায়ার সার্ভিস ডুবুরি দলের সঙ্গে ট্রলারে দুর্ঘটনাস্থলে যান সাংবাদিকরা। কিন্তু সেখানে তীব্র স্রোত ও বড় বড় ঢেউয়ের কারণে ট্রলারটি ফিরে আসতে বাধ্য হয়। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সদস্যরা জানান, উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা অথবা রুস্তম ছাড়া এটি উদ্ধার করা সম্ভব নয়। বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধার জাহাজ এমভি তিস্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা ও লঞ্চটির অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করে। ডুবুরি দল কয়েক দফায় নেমে তল্লাশি চালিয়েও সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত লঞ্চটির অবস্থান শনাক্ত করতে পারেনি। লঞ্চটি প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ফুট পানির গভীরে তলিয়ে গেছে। র‌্যাব হেলিকপ্টার দিয়ে দুর্ঘটনাস্থল মাঝ পদ্মায় টহল দিচ্ছে। ওভারলোডিং ও পদ্মায় তীব্র সে াতের কারণে লঞ্চটি ডুবে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার পর ট্রলার ও স্পিডবোট নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারাই উদ্ধার কাজ শুরু করেন। পরে কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেন। নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানও লঞ্চডুবির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। তিনি মাওয়ায় অবস্থান করে উদ্ধার তৎপরতা তদারকি করছেন। তিনি বলেন, লঞ্চ উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও উদ্ধার তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করছেন। আশা করছি শিগগিরই লঞ্চটি উদ্ধার করা যাবে। বেলা ২টায় তিনি লঞ্চডুবির স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান ড. খন্দকার শামসুদ্দোহা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোঃ সোহরাব হোসেন শেখ এবং মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক তার সঙ্গে ছিলেন। লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার সময় পাশ দিয়ে যাওয়া ফেরি থেকে একযাত্রী লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। এতে দেখা যায় ঢেউয়ের তোড়ে হঠাৎ করে লঞ্চটি একদিকে কাত হয়ে যায়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই লঞ্চটি ডুবে যেতে থাকে। যাত্রীরা হাউমাউ, বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করে সাঁতরাতে থাকেন। পাশের ফেরি, স্পিডবোট ও ট্রলার দিয়ে বেঁচে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। লঞ্চ দুর্ঘটনায় আহত প্রায় ১৫ জনকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাদের মিটফোর্ড ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেয়া হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন- সীমা, রুবেল, শাফিয়া, দীপা, হেমায়েত, সামিয়া, রুবেল (২), আজিজুল হক, হানিফ মিয়াসহ আরও কয়েকজন। নিখোঁজ যারা : মাওয়াঘাট শ্রীনগর ও লৌহজং থানা পুলিশের খোলা কন্ট্রোলরুমে স্বজনদের কাছ থেকে তালিকা নিয়ে নিখোঁজদের একটি তালিকা করা হয়। এতে রাত ৮টা পর্যন্ত ৮৭ জনের নামের তালিকা করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন- মুকসেদপুরের মিলন, আরাফাত, মাকসুদা বেগম, রাব্বী, হানিফা, মেরি, তাসলিমা, রবিউল, উজিরপুরের জিনা রহমান, পলি, মিজানুর রহমান, আরমান, আরফিন, ইমতিয়াজ রহমান, আফজাল কাজী, শিবচরের সুজন, সিরাজ, ইস্রাফিল, ইভা, মিলি, মইনুল, রোকসানা, ফালানী, ইউসুফ, জালাল, কবির হাওলাদার, রুবি, সাদিয়া, সাত্তার, বিল্লাল, ফরহাদ, আমেনা, সালমা, আয়েশা বেগম, নূর আলম, শিল্পী, ফাহিম, রাজিব, আহন, জাজিরার শাহানারা, হালিমা, কল্পনা, ফতুল্লার আয়েশা বেগম, সারা বেগম, রোজিনা, আমেনা, জাহানারা, হালিমা, তানজিলা, হীরন নেসা, গৌরনদীর ময়না, ভাঙ্গার রবিউল, আবদুল জব্বার, মাদারীপুর সদরের কফিল উদ্দিন, কালকিনির বিসাই সর্দার, সদরপুরের সাইদুল ইসলাম, নগরকান্দার শাহীনুর, মিজান, কাশিয়ানীর সিরাজ, ডাসারের ওয়াহিদ, হারেস, মনিস, নলছিটির বাবুল, হেমায়েত, বাকেরগঞ্জের জাকির হোসেন, ঝালকাঠির শারমিন জাহান, মিরাজসহ আরও অনেকে। ১৫ মে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার দৌলতপুরের কাছে মেঘনা নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে এমভি মিরাজ-৪ নামে একটি লঞ্চ ডুবে যায়। ওই ঘটনায় ৫৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। সর্বাত্মক চেষ্টার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর : নিমজ্জিত লঞ্চটি উদ্ধারে সর্বাত্মক শক্তি নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, ফায়ার ব্রিগেড ও সিভিল ডিফেন্স এবং বিআইডব্লিউটিএসহ স্থানীয় প্রশানসকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তার বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে উদ্ধার কাজের সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। নির্দেশ পেয়ে উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম এরই মধ্যে মাওয়ার পথে রওনা হয়েছে বলেও জানান শাকিল। দুটি তদন্ত কমিটি : নৌমন্ত্রণালয় এবং সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর সোমবার দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। নৌ-মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, দুই কমিটিকেই ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। নৌ-মন্ত্রণালয় গঠিত সাত সদস্যের কমিটির প্রধান করা হয়েছে একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব নূরউর রহমানকে। এতে বুয়েটের একজন প্রতিনিধি, বিআইডব্লিউটিএর প্রকৌশলী, বিআইডব্লিউটিসির প্রধান প্রকৌশলী, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের প্রধান নটিক্যাল সার্ভেয়ার ছাড়াও মাদারীপুর ও মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সদস্য করা হয়েছে। সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের চার সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অধিদফতরের ইঞ্জিনিয়ার অ্যান্ড শিপ সার্ভেয়ার অ্যান্ড এক্সামিনার এসএম নাজমুল হককে। সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের নটিক্যাল সার্ভেয়ার অ্যান্ড এক্সামিনার ক্যাপ্টেন মোঃ গিয়াস উদ্দিন আহমেদ এবং সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল হাসানকে এ কমিটির সদস্য করা হয়েছে। সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের মুখ্য পরিদর্শক মোঃ শফিকুর রহমানকে এই কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। লঞ্চ ও সিবোট চলাচল বন্ধ : মাদারীপুর প্রতিনিধি একেএম নাসিরুল হক জানান, মাওয়ায় লঞ্চডুবির ঘটনায় দেশের দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম প্রবেশদ্বার মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে বেলা ১টা থেকে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে এই রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। এক পর্যায়ে ফেরি পারাপার শুরু হয়। তবে সন্ধ্যা অবধি লঞ্চ ও সিবোট চলাচল বন্ধ ছিল। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাশ, শরীয়তপুর এলাকার নির্বাচিত এমপি মোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ। ক্ষতিগ্রস্তদের অনুদান : মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা অনুদান দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। নৌপরিবহনমন্ত্রী মোঃ শাহাজাহান খান প্রতিটি লাশের পরিবারকে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা এবং মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসান বাদল ২০ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন।  

No comments:

Post a Comment