Thursday, September 18, 2014

৬০ শতাংশ প্রকল্পের কাজ সময় মতো শেষ হয় না : জাইকা:নয়াদিগন্ত

বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পের ৬০ শতাংশই নির্ধারিত সময়ে শেষ হয় না। বছরের পর বছর চলে এসব প্রকল্প। পাঁচ বছরে সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর গড় ব্যয় ৪২ ভাগ বেড়েছে। প্রকল্পগুলোর গড় মেয়াদও বৃদ্ধি হয়েছে তিন বছর। সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির দুর্বলতাই এর জন্য মূলত দায়ী বলে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বলেছে।  পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ ও জাইকার যৌথ আয়োজনে গতকাল বঙ্গব
ন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্ট্রেনদেনিং পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নামক প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে জাইকার এক উপস্থাপনায় এ তথ্য উঠে এসেছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে জাইকার চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ মিকিও হাতায়েদা, পরিকল্পনা সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আরাস্তু খান প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কার্যক্রম বিভাগের যগ্ম প্রধান সায়েদুল হক ও এসপিআইপিএস প্রকল্পের টিম লিডার ড. তোশিয়াসু কাতু। জাইকা মনে করে, সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পে সময় ও ব্যয় বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে। সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনায় টেকসই উন্নয়ন না হলে মধ্যম আয়ের দেশ গড়া বাংলাদেশের জন্য কঠিন হবে।  পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রকল্পগুলোর ব্যয় বৃদ্ধি ও মেয়াদবৃদ্ধি হচ্ছে যা মোটেই কাম্য নয়। এ জন্য সুব্যবস্থাপনা, অর্থনীতিতে সত্যিকারভাবে অবদান রাখতে পারে এমন প্রকল্প নির্বাচন এবং স্বপ্রণোদিত হয়ে কাজ করা একান্তভাবে দরকার। আমাদের দেখা দরকার আমরা আমাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ কত দ্রুত ফেরত পেতে পারি। সেই সাথে দেখতে হবে প্রকল্পগুলো কেমন কর্মসংস্থান তৈরি করছে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধি কতটুকু হচ্ছে।  জাইকার চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে প্রকল্প বাস্তবায়নের গুণগত মানের দিকে এখন নজর দিতেই হবে। এ জন্য সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন হার ভালো হলেও এর গুণগত মান নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। এ ক্ষেত্রে জাপানের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের কাজে লাগবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। জাইকা বলছে, সার্বিক উদ্দেশ্য অর্জন করতে হলে প্রকল্প প্রণয়নের ধাপগুলোকে আরো গতিশীল করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সুব্যবস্থাপনা, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমাতে হবে। সেই সাথে পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে প্রকল্প যেন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। উন্নয়ন প্রকল্পে সরকারি বিনিয়োগকে কার্যকর করে সামষ্টিক অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ‘স্ট্রেনদেনিং পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ শীর্ষক প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়। জুলাই ২০১৪ থেকে জুন ২০১৭ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা; এর মধ্যে ৪০ কোটি টাকাই দিচ্ছে জাইকা।

No comments:

Post a Comment