Thursday, September 18, 2014

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবীদের ওপর হামলা:নয়াদিগন্ত

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার স্যাগ্রহণ পিছিয়ে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নতুন তারিখ ধার্য করেছেন আদালত। পুরান ঢাকার বকশিবাজারে আলিয়া মাদরাসা মাঠে ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায় গতকাল এ আদেশ দেন। ওই দিন খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে হাজিরের নির্দেশ দিয়ে আদালত জানিয়েছেন, সবার উপস্থিতিতে স্যাগ্রহণ করা হবে। এর আগে আদালতের ম
ধ্যেই খালেদা জিয়ার পরে আইনজীবীদের ওপর হামলা চালায় দুদকের পক্ষের একজন আইনজীবী, যার কোনো ‘আইনজীবী সনদ’ নেই। এ নিয়ে দুই পক্ষ হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কিতে লিপ্ত হওয়ায় অচলাবস্থা দেখা দেয় বিচারিক কার্যক্রমে। স্যাগ্রহণ পেছানোর আবেদনের শুনানি শেষে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিব্রত হয়ে বিচারক এজলাস থেকে নেমে যান। পাঁচ মিনিট পর পুলিশের হস্তেেপ পরিস্থিতি শান্ত হয়। গতকাল আদালতে বেগম জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন- সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া ও অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ভূইয়া, অ্যাডভোকেট হোসেন আলী খান, অ্যাডভোকেট আবদুল খালেক, ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান প্রমুখ। গতকাল এ দুই মামলায় স্যাগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। সকালে স্যাগ্রহণ পেছাতে সময় চেয়ে আবেদন জমা দেন মামলা দু’টির অন্যতম আসামি খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। বেগম জিয়া উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে আরো একটি আবেদন জানানো হয় এ সময়। শুনানি শেষে বিচারক খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতির আবেদন মঞ্জুর করলেও স্যাগ্রহণ পেছানোর আবেদন নাকচ করে দিয়ে স্যাগ্রহণ শুরুর আদেশ দেন। এ আদেশের পরপরই খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালত কে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। একপর্যায়ে দুদকের পক্ষে আসা সনদবিহীন আইনজীবী ইমরান হোসেন বেগম জিয়ার পক্ষের আইনজীবীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় বেগম জিয়ার পক্ষের আইনজীবী আবদুল খালেক মিলন ও হোসেন আলী খান আহত হন ; তাদের গাউন ছিঁড়ে ফেলা হয়। এ সময় বিব্রত হয়ে বিচারক এজলাস থেকে নেমে যান। পাঁচ মিনিট পর পুলিশের হস্তেেপ পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে সরকারপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল ও আসামিপরে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বিচারকের খাসকামরায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে যান। বেলা দেড়টায় বিচারক এজলাসে ফিরে এলে দুদকের পে বহিরাগত ও সনদপ্রাপ্ত নন এমন একজন আইনজীবী তাদের ওপর হামলা করেছেন বলে অভিযোগ করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি এর বিচারের দাবি জানান আদালতের কাছে। অন্যথায় এ আদালতে শুনানি করবেন না বলে উল্লেখ করেন। আসামিপরে আইনজীবীরা এখানে নিরাপত্তাহীন বলেও অভিযোগ করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। দুদকের আইনজীবীরা এর প্রতিবাদ করে বলেন, আদালতে বহিরাগত কাউকে আনা হয়নি। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তিনি একজন শিানবিস আইনজীবী। এ দিকে মামলা দু’টিতে স্যা দিতে দুদকের উপপরিচালক হারুন অর রশিদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে বিচারক বাসুদেব রায় স্যাগ্রহণ স্থগিত করে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নতুন তারিখ ধার্য করেন। ওইদিন খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে হাজিরের নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেন, সবার উপস্থিতিতে স্যাগ্রহণ করা হবে। খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিরাপত্তার অভাবে আদালতে আসতে পারেননি। তা ছাড়া মামলা দু’টির বিষয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকায় স্যাগ্রহণের জন্য সময় চাওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিষয়ে আপিল বিভাগে চারটি আবেদন করা হয়েছিল। আপিল বিভাগ দু’টি আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। আরো দু’টি আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে। তিনি বলেন, নিয়মানুসারে সুপ্রিম কোর্টে কোনো মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকলে নি¤œ আদালতে কোনো মামলা চলতে পারে না। 

No comments:

Post a Comment