Tuesday, September 23, 2014

ট্রেনের টিকিট মন্ত্রী এমপির কবজায়:কালের কন্ঠ

বাইরে প্রচণ্ড বৃষ্টি আর ভেতরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে বসে ঘামছেন তিন কর্মকর্তা। তাঁদের সামনে মন্ত্রী, এমপি, আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাদের ‘ডিও লেটার’-এর স্তূপ। এসব চিঠিতে ঈদ যাত্রার জন্য ট্রেনের টিকিট চেয়ে অনুরোধের পর অনুরোধ। রেলওয়ের কর্মকর্তারা অনুরোধপত্রগুলো ঘাঁটছেন আর ঘামছেন- কিভাবে সামলাবেন এত ভিআইপি-চাহিদা! গতকাল সোমবার বিকেল সোয়া ৪টায় রাজধানীর রেল ভবনে গিয়ে দেখা যায় এই দৃশ্য
। চিঠির পাশাপাশি মন্ত্রীর ফোন আসছে। কর্মকর্তারা মাথা নেড়ে বিনয়ের সঙ্গে মোলায়েম জবাব দিচ্ছেন, ‘জি, পাবেন, পেয়ে যাবেন।’ রেল ভবনের নিচতলায় একজন যুগ্ম মহাপরিচালকের কক্ষে গিয়ে দেখা গেল, টেলিফোনে তিনি হন্যে হয়ে খুঁজছেন মাহবুব সাহেবকে। মাহবুব হলেন রেলের ঢাকা বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা। বারবার ফোন দিয়েও তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। একসময় ফোনে মাহবুবকে পেয়ে হাঁফ ছাড়েন ওই যুগ্ম মহাপরিচালক। অস্থির হয়ে বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় নিজে চিঠি লিখেছেন। আগামী ৩ অক্টোবর হাওর এক্সপ্রেসের দুটো টিকিট লাগবে।’ ফোন রেখে সামনে বসা গোলাম কিবরিয়া নামের টিকিটপ্রার্থীকে বললেন, ‘আমি ক্লিয়ার করে দিয়েছি। নিশ্চিত টিকিট পাবেন।’ তার পরও গোলাম কিবরিয়া বললেন, ‘আমার ফোন নম্বরটা রাখেন। কোনো সমস্যা হলে ফোন দেব।’ উভয়ের মধ্যে ফোন নম্বর বিনিময় হয়। রেল ভবনে এখন এমন দৃশ্য দেখা যাবে প্রতিদিন। ঈদ সামনে রেখে বাড়ি যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট পেতে শুরু হয়েছে তদবির-ঝড়। যত বেশি ‘বেগে ও রেগে’ তদবির করা যাবে, তত নিশ্চিত হবে ট্রেনের টিকিট। গণমানুষের পরিবহন ট্রেন। নিরাপদ ও কম ভাড়ার কারণে সাধারণ মানুষের কাছে এই পরিবহন খুবই জনপ্রিয়। বছরে প্রায় ছয় কোটি যাত্রী ট্রেনে ভ্রমণ করে। ঈদ মৌসুমে শুধু রাজধানী থেকেই বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা হয়। তবে এই ‘সুখের’ ট্রেনযাত্রায় অহরহ কাঁটা বেঁধাতে ব্যস্ত মন্ত্রী-এমপি-নেতারা। কোটা পদ্ধতির নামে চাহিদাপত্র (ডিও লেটার) পাঠিয়ে মন্ত্রী-এমপি, তাঁদের একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা জনসাধারণের টিকিট আগেভাগে নিজেদের দখলে নিয়ে নিচ্ছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এবার ঈদে বাড়ি ফেরার অগ্রিম টিকিট বিক্রির ১০ দিন আগে থেকেই রাজধানীর রেল ভবনে প্রতিদিন জমছে মন্ত্রী-এমপির দপ্তর থেকে আসা অনুরোধপত্র আর সশরীরে তদবির। শুধু তাই নয়, খোদ রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশও নেমেছে টিকিটের ধান্দায়। অবস্থা এমন যে তদবির ও অনুরোধের চাপ সামাল দিতে গিয়ে প্রাত্যহিক কর্মকাণ্ড চালাতে পারছেন না রেল কর্মকর্তারা। গত রবিবার দুপুরে রেল ভবনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই তদবির-চাপ সামাল দিতে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকও করেছেন। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রেলের টিকিটের ৩৫ শতাংশই চলে যায় কোটায়। কোটার ৫ শতাংশ ভিআইপিদের জন্য, ৫ শতাংশ রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য, অনলাইনে বিক্রির জন্য ২৫ শতাংশ। কিন্তু বাস্তবে ৫ শতাংশ ভিআইপি কোটার বিপরীতে ৭ থেকে ১০ গুণ বেশি টিকিট দিতে হচ্ছে। একজন কর্মকর্তা উদাহরণ টেনে কালের কণ্ঠকে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের সুবর্ণ এক্সপ্রেসে ৭৯৯টি আসন আছে। এর মধ্যে কোটায় ভিআইপিদের পাওয়ার কথা ৪০টি। গত ঈদ মৌসুমে প্রায় প্রতিদিনই নির্দিষ্ট কোটার চেয়ে ৭ থেকে ১০ গুণ বেশি টিকিট দিতে হয়েছে। এই বাড়তি টিকিট দেওয়া হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের বরাদ্দ থেকে। ঢাকা থেকে অন্য বিভাগীয় শহরগুলো তো বটেই, ভিআইপি কোটার সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে। রেল ভবনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ঈদে ৬০ জন সংসদ সদস্য টিকিটের জন্য চাহিদাপত্র পাঠিয়েছিলেন। এর পাশাপাশি ফোনে তদবির তো ছিলই। রেল ভবনে চলতি মাসে অনুষ্ঠিত এক সভায় কোটা পদ্ধতি বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছিল। রেল কর্মকর্তারা জানান, যোগাযোগমন্ত্রী থাকাকালে ২০১০ সাল থেকে সৈয়দ আবুল হোসেন ও তখনকার রেলের মহাপরিচালক টি এ চৌধুরীর সময়ে কোটা পদ্ধতি রেলের ঘাড়ে চেপে বসে। পরে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত রেলমন্ত্রী হয়েই এক আদেশে কোটাকে পাকাপোক্ত করেন। গতকাল রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক ভিআইপিদের তদবিরের চাপের বিষয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের রেলের সম্পদ সীমিত। সবারই প্রত্যাশা বেড়েছে। সবাই ট্রেনে চড়তে চায়। ডাক্তার, ছাত্র যে আসে তাকেই টিকিট দেওয়ার চেষ্টা করি। সেভাবে ভিআইপিরাও যেতে চান।’ গতকাল সোমবারও রেল ভবনে জমা পড়ে অর্ধশত অনুরোধপত্র। গত রবিবার দুপুরে রেল ভবনে রেলের মহাপরিচালক মো. তাফাজ্জল হোসেনের কক্ষে গেলে তাঁকেও টিকিটের অনুরোধপত্র ঘাঁটতে দেখা যায়। তিনি বললেন, ‘আমরা যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিয়েছি। চাপ তো আছেই।’ জানা যায়, প্রতি ঈদ মৌসুমেই ভিআইপিদের একটি অংশ ট্রেনের টিকিট না পেলে মহাপরিচালকসহ অন্য পদস্থ কর্মকর্তাদের ‘গালাগাল’ শোনান। জানা গেছে, ঈদুল আজহার জন্য আগামী ২৬ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে রাজধানীর কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে। কিন্তু এই টিকিট পেতে ১৬ সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হয়েছে ‘চাহিদাপত্রাঘাত’। এ যাবৎ পাঠানো টিকিটের অনুরোধপত্রের মধ্যে রেল কর্মকর্তাদের হতবাক করেছে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের চাহিদা। তাঁর চিঠিতে দেখা গেল, তিনি চেয়েছেন ২ অক্টোবরের ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী সিল্ক সিটি ট্রেনের পাঁচটি এসি চেয়ার ও একটি সিঙ্গেল এসি কেবিন, একই দিন পদ্মা এক্সপ্রেসের দুটি এসি চেয়ার ও একটি সিঙ্গেল কেবিন, একই দিন নীলসাগর ট্রেনের একটি সিঙ্গেল এসি কেবিন। এ ছাড়া ৩ অক্টোবর ধূমকেতু ট্রেনের সাতটি এসি চেয়ার, পদ্মা এক্সপ্রেসের দুটি সিঙ্গেল এসি কেবিন ও দুটি শোভন চেয়ার টিকিটও চেয়েছেন তিনি। এ ছাড়া ৪ অক্টোবর ধূমকেতু ট্রেনের একটি সিঙ্গেল এসি কেবিন ও তিনটি এসি চেয়ার টিকিট, পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের চারটি এসি চেয়ার টিকিটও চাওয়া হয়েছে। এত সব টিকিট কার জন্য চাওয়া হয়েছে জানার জন্য গত রবিবার বিকেলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর মোবাইলে ফোন করা হলে অপর প্রান্ত থেকে ফোন ধরেন প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জোবায়ের হোসেন রুবেল। তিনি বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী নিউ ইয়র্ক যাবেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। ট্রেনের টিকিটের জন্য প্রতিমন্ত্রী ডিও লেটার দিয়েছেন। আমরা ঈদের জন্য বাড়িতে যাব। তার জন্যই এটি দেওয়া হয়েছে।’ প্রতিমন্ত্রীর এপিএস সিরাজ মাহমুদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত বছরও আমরা ডিও লেটার দিয়েছিলাম। সব টিকিট পাইনি। এবারও দিয়েছি, তবে সব পাব বলে মনে হয় না।’ খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের একান্ত সচিব (পিএস) মো. হেলাল হোসেন ১৬ সেপ্টেম্বর রেল ভবনে চিঠি পাঠিয়েছেন ট্রেনের তিনটি টিকিটের জন্য। চিঠিতে ৩ অক্টোবর নীলসাগর ট্রেনের তিনটি আসনের একটি কেবিন চেয়েছেন। গত রবিবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে পিএস মো. হেলাল হোসেনের খোঁজ নিয়ে জানা গেল, তিনি আগের দিন বিদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। খাদ্যমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) অ্যাডভোকেট খায়রুল ইসলাম ভুঁইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, খাদ্যমন্ত্রীর মেয়ে বা অন্য কোনো আত্মীয়র জন্য এই টিকিট চাওয়া হয়েছে। সরকারের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর এপিএস রেল ভবনে একইভাবে চাহিদা পাঠিয়েছেন। তাঁর তালিকায় আছে ২ অক্টোবর তিস্তা এক্সপ্রেসের প্রথম শ্রেণির একাধিক টিকিট, একই দিন সুবর্ণ এক্সপ্রেসের চারটি এসি চেয়ার টিকিট, ৩ অক্টোবর ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাওয়ার জন্য পারাবত এক্সপ্রেসের শোভন চেয়ার শ্রেণির চারটি টিকিট। তিনি ৪ অক্টোবর ঢাকা থেকে আখাউড়া যাওয়ার জন্য মহানগর প্রভাতী আন্তনগর ট্রেনের তিনটি শোভন চেয়ার টিকিটও চেয়েছেন। গত রবিবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে গেলে ওই এপিএসকে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। ওই দিন বিকেলে টেলিফোনে ‘এত টিকিট কেন চেয়েছেন’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এলাকার দলীয় নেতা-কর্মীরা আমার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে। তারা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট নিতে চায় না। পরিচিতরা যদি আমার স্বাক্ষরে টিকিট নিয়ে বাড়ি যেতে পারে, তাহলে তো পরের উপকার করা হবে।’ তিনি আরো বলেন, মন্ত্রীর প্যাডে আমি ডিও লেটার দিইনি। কবে এই সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিয়েছিলাম, তা আমার মনে নেই।’ আরেক প্রতিমন্ত্রীর এপিএস গত ১৭ সেপ্টেম্বর পাঠানো চিঠিতে ৩ অক্টোবর অগ্নিবীণা ট্রেনে প্রথম শ্রেণির চেয়ার কোচের তিনটি টিকিট চেয়েছেন। এ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির একান্ত সচিবও ১৮ সেপ্টেম্বর পাঠিয়েছেন টিকিট চাহিদার চিঠি। তাঁর তালিকায় আছে ২ অক্টোবর রাজশাহী যাওয়ার জন্য পদ্মা এক্সপ্রেসের সাতটি এসি চেয়ার, ৩ অক্টোবর ধূমকেতু ট্রেনের তিনটি এসি চেয়ার টিকিট। এ ব্যাপারে জানতে গত রবিবার বিকেলে সংশ্লিষ্ট এমপির মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। আরেক প্রভাবশালী মন্ত্রীর একান্ত সচিব ১৬ সেপ্টেম্বর রেল ভবনে পাঠানো চিঠিতে ২ অক্টোবরের সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের পাঁচটি এসি চেয়ার কোচ শ্রেণির টিকিট চেয়েছেন। ঈদের দুই দিন আগে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর ধূমকেতু ট্রেনের বার্থের চারটি টিকিট চেয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস। রবিবার বিকেলে তাঁর মোবাইলে ফোন করা হলে ধরেন তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, ‘এমপি মহোদয় রেস্ট নিচ্ছেন। বিষয়টি আমি জানি। আমরা টিকিট পাব।’ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল ওদুদ ১৮ সেপ্টেম্বর পাঠানো এক পত্রে ৩ অক্টোবর ধূমকেতু ট্রেনের চার সিটের একটি কেবিন বরাদ্দের অনুরোধ করেছেন। এ ছাড়া ২ অক্টোবর পদ্মা এক্সপ্রেসের চার আসনের একটি কেবিনও চেয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার রেল ভবনে ঢাকার সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের পাঠানো অনুরোধপত্রও আসে। ২ থেকে ৪ অক্টোবর যমুনা, পদ্মা, ধূমকেতু ও সিল্কসিটি ট্রেনের ২৮টি টিকিট চেয়েছেন তিনি। শিক্ষাসংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি আফসারুল আমিনের নিকটাত্মীয় ভ্রমণ করবেন বলে নীলসাগর ট্রেনের তিনটি এসি চেয়ার টিকিট চেয়েছেন। ঝিনাইদহ-৩ আসনের সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজ ৫ অক্টোবর ঢাকা থেকে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসের কেবিনের আটটি টিকিট চেয়েছেন। সংরক্ষিত মহিলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি ২ অক্টোবর ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের ডাবল কেবিন (আটটি) টিকিট চেয়েছেন। সেই সঙ্গে একই ট্রেনে শোভন শ্রেণির আরো চারটি টিকিটের চাহিদাপত্র পাঠিয়েছেন। রেলসূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে রেলে নতুন কোচ যোগ হয়নি বলে যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা বাড়েনি রেলে। ঢাকা-সিলেট রুটের পারাবত এক্সপ্রেসে আসন আছে ৫০০, একই রুটে জয়ন্তিকায় ৪০০ ও উপবনে ৩৬০টি আসন আছে। নতুন কোচ যোগ করা হলে এসব ট্রেনসহ বিভিন্ন রুটের ট্রেনে যাত্রী পরিবহন দ্বিগুণ বাড়ানো সম্ভব হতো। কিন্তু সাধারণ যাত্রীদের টিকিট দিতে হচ্ছে ভিআইপিদের। রেলের মহাপরিচালক তাফাজ্জল হোসেন অবশ্য বলেন, আগামী বছর ভারত থেকে নতুন ১২০টি কোচ আনা হবে। এ ছাড়া আরো ২০০ নতুন কোচ কেনা হবে এডিবির আর্থিক সহযোগিতায়। রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) শাহ জহিরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। ট্রেন সময়মতো চলাচল করছে, তাই চাহিদা বাড়ছে।’ বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, মন্ত্রী-এমপিদের ডিও লেটারে ট্রেনের টিকিট নিয়ে নিকটাত্মীয় ও আমলারা ঈদে খুশিমনে বাড়ি যান। তাঁদের লাইনেও দাঁড়াতে হয় না। সাধারণ যাত্রীরা রাত জেগে কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট পায় না। সকাল থেকে দুপুর গড়াতে না গড়াতেই বলা হয় টিকিট নেই। টিকিট ব্লক করে রাখা হয় ভিআইপিদের জন্য।

No comments:

Post a Comment