ে যোগ দেয় তার ছোট বোন একই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম আক্তার। কুলসুমের আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনার অভিযোগে জিয়াত (২২) ðনামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে খিলগাঁও থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুস্তাফিজ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কুলসুমকে উত্ত্যক্তকারী শিমুল চন্দ্রের বন্ধু হচ্ছেন জিয়াত। তিনিও নানা সময় কুলসুমকে উত্ত্যক্ত করতেন। গত শনিবার সন্ধ্যায় শিমুল কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে কুলসুমের নন্দীপাড়ার ছোট বটতলার বাসায় যান। কুলসুমকে তাঁরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও অপমানসূচক কথা বলেন। একপর্যায়ে বাসার দরজা বন্ধ করে দিয়ে বিষপান করে কুলসুম। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাত নয়টার দিকে মারা যায় সে। ঘটনার পর কুলসুমের মা সাথী আক্তার শিমুল, তাঁর মা-বাবাসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। খিলগাঁও থানার ওসি বলছেন, ঘটনার পর থেকেই শিমুল ও তাঁর পরিবার লাপাত্তা। তাঁদের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। অবশ্য শিমুল ও তাঁর বাবা ২০১১ সালের একটি হত্যা মামলার আসামি। ওই মামলায় তাঁরা জামিনে আছেন শুনেছি। তবে এলাকার মানুষ তাঁদের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অভিযোগ করেছেন। শিমুল রাজধানীর নন্দীপাড়ারই বাসিন্দা। এলাকায় বখাটে, নেশাগ্রস্ত ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবেই পরিচিত। মানববন্ধন: মানববন্ধনে কুলসুমের বোন মরিয়ম জানায়, ‘আপুকে পথে পেলেই ডিস্টার্ব করত শিমুল। অনেক সময় বাসায় এসে জানালা দিয়ে ডাকাডাকি করত। আপু কথা বলতে চাইত না বলে গালিগালাজ করত। গত শনিবারও আপুকে গালিগালাজ করছিল শিমুল। সইতে না পেরে আপু বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। আসলে আমার আপুকে মেরে ফেলছে বখাটেরা। আমি তাদের শাস্তি চাই।’ মানববন্ধনে শুরু থেকেই শিক্ষকদের জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদছিল মরিয়ম। তার আহাজারি ছুঁয়ে যায় উপস্থিত অন্যদেরও। সৃষ্টি হয় শোকাবহ পরিবেশের। এর আগে কুলসুমের আত্মহত্যার ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শতাধিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্কুল থেকে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন শিক্ষকেরা। তাঁরা সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে যান। তবে সচিবালয়ের কর্মকর্তারা থানার সুপারিশসহ স্মারকলিপি দিতে বলেন। পরে শিক্ষকেরা সুপারিশসহ স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সচিবালয় থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর সচিবালয়ের সামনে অপেক্ষমাণ শতাধিক শিক্ষার্থীকে নিয়ে তাঁরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন। ব্যানার নিয়ে একে একে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে যান তাঁরা। শিমুলসহ দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করে চলছিল স্লোগান, বক্তৃতা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বলেন, উম্মে কুলসুম খুব ভালো ছাত্রী ছিল। লেখাপড়ায় বেশ মনোযোগী ছিল সে। বড় হয়ে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু বখাটেরা তাকে বাঁচতে দিল না। শিক্ষক আল আমিন বলেন, ‘মামলায় এজাহারে থাকা আসামি ছাড়া আরও কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। আমরা পুলিশকে তাদের নাম বলেছি। প্রত্যাশা করি, পুলিশ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তিদের ধরে আইনের আওতায় আনবে।’ কুলসুমের চাচা ফয়েজ আহম্মেদ বলেন, ‘কুলসুম মৃত্যুর আগে বলে গিয়েছে, বখাটেরা যাতে মাফ না পায়। আমাদেরও দাবি এটাই, বখাটেদের যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।’ গত রোববার রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দির মোল্লাকান্দি এলাকায় স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয় উম্মে কুলসুমের লাশ। কুমিল্লায় উম্মে কুলসুমের বাবার বাড়ি। তাঁর বাবা গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ১৯৯৯ সালে গাজীপুর বড়বাড়ি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন। মায়ের দ্বিতীয় সংসারে আদর-যত্নে গড়ে উঠছিল উম্মে কুলসুমের ভবিষ্যৎ। তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর পর থেকেই অঝোরে কেঁদে চলেছেন তাঁর সৎবাবা মো. আশিকও। এদিকে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিপ্লবী নারী সংহতি। গতকাল সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভয়াবহ মাত্রায় বেড়ে চলেছে উত্ত্যক্তকরণ, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনা। নারীদের ঘরে-বাইরে চলাফেরায় নিরাপত্তাবিধানে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Tuesday, September 9, 2014
সবার দাবি একটিই, বখাটেদের শাস্তি:প্রথম অালো
ে যোগ দেয় তার ছোট বোন একই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম আক্তার। কুলসুমের আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনার অভিযোগে জিয়াত (২২) ðনামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে খিলগাঁও থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুস্তাফিজ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কুলসুমকে উত্ত্যক্তকারী শিমুল চন্দ্রের বন্ধু হচ্ছেন জিয়াত। তিনিও নানা সময় কুলসুমকে উত্ত্যক্ত করতেন। গত শনিবার সন্ধ্যায় শিমুল কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে কুলসুমের নন্দীপাড়ার ছোট বটতলার বাসায় যান। কুলসুমকে তাঁরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও অপমানসূচক কথা বলেন। একপর্যায়ে বাসার দরজা বন্ধ করে দিয়ে বিষপান করে কুলসুম। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাত নয়টার দিকে মারা যায় সে। ঘটনার পর কুলসুমের মা সাথী আক্তার শিমুল, তাঁর মা-বাবাসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। খিলগাঁও থানার ওসি বলছেন, ঘটনার পর থেকেই শিমুল ও তাঁর পরিবার লাপাত্তা। তাঁদের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। অবশ্য শিমুল ও তাঁর বাবা ২০১১ সালের একটি হত্যা মামলার আসামি। ওই মামলায় তাঁরা জামিনে আছেন শুনেছি। তবে এলাকার মানুষ তাঁদের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অভিযোগ করেছেন। শিমুল রাজধানীর নন্দীপাড়ারই বাসিন্দা। এলাকায় বখাটে, নেশাগ্রস্ত ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবেই পরিচিত। মানববন্ধন: মানববন্ধনে কুলসুমের বোন মরিয়ম জানায়, ‘আপুকে পথে পেলেই ডিস্টার্ব করত শিমুল। অনেক সময় বাসায় এসে জানালা দিয়ে ডাকাডাকি করত। আপু কথা বলতে চাইত না বলে গালিগালাজ করত। গত শনিবারও আপুকে গালিগালাজ করছিল শিমুল। সইতে না পেরে আপু বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। আসলে আমার আপুকে মেরে ফেলছে বখাটেরা। আমি তাদের শাস্তি চাই।’ মানববন্ধনে শুরু থেকেই শিক্ষকদের জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদছিল মরিয়ম। তার আহাজারি ছুঁয়ে যায় উপস্থিত অন্যদেরও। সৃষ্টি হয় শোকাবহ পরিবেশের। এর আগে কুলসুমের আত্মহত্যার ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শতাধিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্কুল থেকে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন শিক্ষকেরা। তাঁরা সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে যান। তবে সচিবালয়ের কর্মকর্তারা থানার সুপারিশসহ স্মারকলিপি দিতে বলেন। পরে শিক্ষকেরা সুপারিশসহ স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সচিবালয় থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর সচিবালয়ের সামনে অপেক্ষমাণ শতাধিক শিক্ষার্থীকে নিয়ে তাঁরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন। ব্যানার নিয়ে একে একে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে যান তাঁরা। শিমুলসহ দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করে চলছিল স্লোগান, বক্তৃতা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বলেন, উম্মে কুলসুম খুব ভালো ছাত্রী ছিল। লেখাপড়ায় বেশ মনোযোগী ছিল সে। বড় হয়ে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু বখাটেরা তাকে বাঁচতে দিল না। শিক্ষক আল আমিন বলেন, ‘মামলায় এজাহারে থাকা আসামি ছাড়া আরও কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। আমরা পুলিশকে তাদের নাম বলেছি। প্রত্যাশা করি, পুলিশ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তিদের ধরে আইনের আওতায় আনবে।’ কুলসুমের চাচা ফয়েজ আহম্মেদ বলেন, ‘কুলসুম মৃত্যুর আগে বলে গিয়েছে, বখাটেরা যাতে মাফ না পায়। আমাদেরও দাবি এটাই, বখাটেদের যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।’ গত রোববার রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দির মোল্লাকান্দি এলাকায় স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয় উম্মে কুলসুমের লাশ। কুমিল্লায় উম্মে কুলসুমের বাবার বাড়ি। তাঁর বাবা গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ১৯৯৯ সালে গাজীপুর বড়বাড়ি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন। মায়ের দ্বিতীয় সংসারে আদর-যত্নে গড়ে উঠছিল উম্মে কুলসুমের ভবিষ্যৎ। তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর পর থেকেই অঝোরে কেঁদে চলেছেন তাঁর সৎবাবা মো. আশিকও। এদিকে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিপ্লবী নারী সংহতি। গতকাল সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভয়াবহ মাত্রায় বেড়ে চলেছে উত্ত্যক্তকরণ, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনা। নারীদের ঘরে-বাইরে চলাফেরায় নিরাপত্তাবিধানে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment