তু গত আড়াই বছরেও এ সভা ডাকা হয়নি। এর আগে অনুষ্ঠিত তিনটি বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্তগুলোও আলোর মুখ দেখেনি। এর মধ্যে অন্যতম ছিল- নিষ্ক্রিয় ও অযোগ্যদের বাদ দিয়ে যোগ্য ও সক্রিয় নেতাদের দিয়ে নির্বাহী কমিটি পুনর্গঠন। দীর্ঘদিনেও এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় নেতাকর্মীরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বিএনপির ৫ম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ৩৮৬ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই বছর ৩১ জুলাই নির্বাহী কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ২০১১ সালের ২৩ এপ্রিল দ্বিতীয় এবং ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় সবশেষ তৃতীয় বৈঠক। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, দলের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চার লক্ষ্যে নিয়মিত জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা করা সম্ভব হয়নি। তিনি স্বীকার করেন, বিগত বৈঠকগুলোতে নেয়া বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এতে স্বাভাবিকভাবেই নেতাকর্মীরা হতাশ হতে পারেন। মাহবুবুর রহমান বলেন, দলের নানা সমস্যা ও তা সমাধান, ভবিষ্যৎ আন্দোলনের কৌশলসহ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মতামত নেয়া উচিত। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাহী কমিটির সভা ডাকার ব্যাপারে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামে আলোচনা হবে বলে জানান বিএনপির এ নেতা। জানা গেছে, ৩৮৬ সদস্যের নির্বাহী কমিটির মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজন নেতা সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। কমিটি ঘোষণার পর অনেককে কালেভদ্রেও দলীয় ও সরকারবিরোধী কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। বিগত তিনটি বৈঠকেই নির্বাহী কমিটির নিষ্ক্রিয় নেতাদের সরিয়ে সক্রিয়দের স্থান দেয়ার জোরালো দাবি ওঠে। এসব সভায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিষ্ক্রিয় নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যারা পদ নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন না তাদের সরে যেতে হবে। পার্টটাইম রাজনীতি চলবে না। অনেকে বাদ পড়বেন; এ নিয়ে মন খারাপ করবেন না। যোগ্য নেতাদের কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকে নিষ্ক্রিয় নেতাদের একটি তালিকা তৈরিরও নির্দেশ দেন তিনি। খালেদা জিয়ার নির্দেশের পর নিষ্ক্রিয় নেতাদের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়। দলের এমন উদ্যোগে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের মধ্যে চাঙ্গাভাব ফিরে আসে। অপরদিকে বাদ পড়া আতংকে ভুগতে থাকেন নিষ্ক্রিয় ও অযোগ্যরা। কিন্তু অজানা কারণে নিষ্ক্রিয়দের তালিকা তৈরির কাজ স্থগিত হয়ে যায়। দলের ভেতর কিছু সুবিধাভোগী নেতার কারণেই চেয়ারপারসনের ঘোষণা বাস্তবায়িত হয়নি বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতাকর্মীদের। এদিকে নির্বাহী কমিটির সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভারমুক্ত করার দাবি উঠলেও এখনও তা কার্যকর হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। যেসব জেলা কমিটি সফলভাবে সভা সমাবেশ করতে পারবে না তাদের কমিটিও বাতিল করে দেয়া হবে বলে নির্বাহী সভায় হুশিয়ারি দেন খালেদা জিয়া। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো জেলা কমিটিকে এ ব্যাপারে সতর্কও করা হয়নি। নির্বাহী কমিটির সভায় নেতাকর্মীদের ট্রেনিংয়ের জন্য একটি ট্রেনিং ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু কয়েক বছরেও ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু যুগান্তরকে বলেন, কমিটি ঘোষণার পর নিয়মিত নির্বাহী কমিটির সভা হওয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে চাঙ্গাভাব দেখা যায়। কিন্তু দীর্ঘদিন সভা না হওয়া ও আগের বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্ত আলোর মুখ না দেখায় সবাই হতাশ। তিনি বলেন, সামনে সরকারবিরোধী আন্দোলন। কিন্তু এ নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জানেন না। দ্রুত নির্বাহী কমিটির সভা ডেকে আন্দোলন ও সাংগঠনিক বিষয়ে তৃণমূলের মতামত নেয়া প্রয়োজন। নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে আন্দোলনের কৌশল চূড়ান্ত করা হলে তা সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে বলেও জানান এ নেতা। দীর্ঘদিন সভা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান শামীম যুগান্তরকে বলেন, দলের মধ্যে ঐক্য ও গতিশীলতার লক্ষ্যে নিয়মিত নির্বাহী কমিটির সভা ও সেখানে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করা উচিত। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, গত তিনটি বৈঠকে নেয়া একটি সিদ্ধান্তও বাস্তবায়ন হয়নি। চূড়ান্ত আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণে তৃণমূলের মতামত নিতে দ্রুত নির্বাহী কমিটির সভা ডাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Monday, October 20, 2014
গঠনতন্ত্র লংঘন করছে বিএনপি:যুগান্তর
তু গত আড়াই বছরেও এ সভা ডাকা হয়নি। এর আগে অনুষ্ঠিত তিনটি বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্তগুলোও আলোর মুখ দেখেনি। এর মধ্যে অন্যতম ছিল- নিষ্ক্রিয় ও অযোগ্যদের বাদ দিয়ে যোগ্য ও সক্রিয় নেতাদের দিয়ে নির্বাহী কমিটি পুনর্গঠন। দীর্ঘদিনেও এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় নেতাকর্মীরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বিএনপির ৫ম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ৩৮৬ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই বছর ৩১ জুলাই নির্বাহী কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ২০১১ সালের ২৩ এপ্রিল দ্বিতীয় এবং ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় সবশেষ তৃতীয় বৈঠক। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, দলের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চার লক্ষ্যে নিয়মিত জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা করা সম্ভব হয়নি। তিনি স্বীকার করেন, বিগত বৈঠকগুলোতে নেয়া বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এতে স্বাভাবিকভাবেই নেতাকর্মীরা হতাশ হতে পারেন। মাহবুবুর রহমান বলেন, দলের নানা সমস্যা ও তা সমাধান, ভবিষ্যৎ আন্দোলনের কৌশলসহ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মতামত নেয়া উচিত। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাহী কমিটির সভা ডাকার ব্যাপারে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামে আলোচনা হবে বলে জানান বিএনপির এ নেতা। জানা গেছে, ৩৮৬ সদস্যের নির্বাহী কমিটির মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজন নেতা সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। কমিটি ঘোষণার পর অনেককে কালেভদ্রেও দলীয় ও সরকারবিরোধী কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। বিগত তিনটি বৈঠকেই নির্বাহী কমিটির নিষ্ক্রিয় নেতাদের সরিয়ে সক্রিয়দের স্থান দেয়ার জোরালো দাবি ওঠে। এসব সভায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিষ্ক্রিয় নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যারা পদ নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন না তাদের সরে যেতে হবে। পার্টটাইম রাজনীতি চলবে না। অনেকে বাদ পড়বেন; এ নিয়ে মন খারাপ করবেন না। যোগ্য নেতাদের কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকে নিষ্ক্রিয় নেতাদের একটি তালিকা তৈরিরও নির্দেশ দেন তিনি। খালেদা জিয়ার নির্দেশের পর নিষ্ক্রিয় নেতাদের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়। দলের এমন উদ্যোগে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের মধ্যে চাঙ্গাভাব ফিরে আসে। অপরদিকে বাদ পড়া আতংকে ভুগতে থাকেন নিষ্ক্রিয় ও অযোগ্যরা। কিন্তু অজানা কারণে নিষ্ক্রিয়দের তালিকা তৈরির কাজ স্থগিত হয়ে যায়। দলের ভেতর কিছু সুবিধাভোগী নেতার কারণেই চেয়ারপারসনের ঘোষণা বাস্তবায়িত হয়নি বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতাকর্মীদের। এদিকে নির্বাহী কমিটির সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভারমুক্ত করার দাবি উঠলেও এখনও তা কার্যকর হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। যেসব জেলা কমিটি সফলভাবে সভা সমাবেশ করতে পারবে না তাদের কমিটিও বাতিল করে দেয়া হবে বলে নির্বাহী সভায় হুশিয়ারি দেন খালেদা জিয়া। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো জেলা কমিটিকে এ ব্যাপারে সতর্কও করা হয়নি। নির্বাহী কমিটির সভায় নেতাকর্মীদের ট্রেনিংয়ের জন্য একটি ট্রেনিং ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু কয়েক বছরেও ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু যুগান্তরকে বলেন, কমিটি ঘোষণার পর নিয়মিত নির্বাহী কমিটির সভা হওয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে চাঙ্গাভাব দেখা যায়। কিন্তু দীর্ঘদিন সভা না হওয়া ও আগের বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্ত আলোর মুখ না দেখায় সবাই হতাশ। তিনি বলেন, সামনে সরকারবিরোধী আন্দোলন। কিন্তু এ নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জানেন না। দ্রুত নির্বাহী কমিটির সভা ডেকে আন্দোলন ও সাংগঠনিক বিষয়ে তৃণমূলের মতামত নেয়া প্রয়োজন। নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে আন্দোলনের কৌশল চূড়ান্ত করা হলে তা সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে বলেও জানান এ নেতা। দীর্ঘদিন সভা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান শামীম যুগান্তরকে বলেন, দলের মধ্যে ঐক্য ও গতিশীলতার লক্ষ্যে নিয়মিত নির্বাহী কমিটির সভা ও সেখানে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করা উচিত। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, গত তিনটি বৈঠকে নেয়া একটি সিদ্ধান্তও বাস্তবায়ন হয়নি। চূড়ান্ত আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণে তৃণমূলের মতামত নিতে দ্রুত নির্বাহী কমিটির সভা ডাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment