চুর করে বিক্ষুব্ধরা। এ সময় নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে পুলিশসহ আইনশৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন নীরব। হামলার একপর্যায়ে বিএনপি কার্যালয়ের মূল গেটের সঙ্গে স্থাপিত জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্যঘেরা কাচের বেষ্টনী ভাংচুর করা হয়। বর্তমান কমিটি ও বিদ্রোহীরা এর জন্য পরস্পরকে দোষারোপ করেছেন। শনিবার থেকেই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছিল ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের দখলে। তারা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় অফিসে তালা লাগিয়ে দেন। ওইদিন বর্তমান কমিটির কেউ কার্যালয়ে যাননি। গতকাল সকালে বর্তমান কমিটির সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের নেতৃত্বে কয়েকশ’ নেতাকর্মী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন। তারা চারতলায় অবস্থিত কার্যালয়ে লাগানো তালা ভেঙে সেখানে প্রবেশ করেন। কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেন বর্তমান কমিটির নেতা ও তাদের সমর্থকরা। বেলা পৌনে ১টার দিকে ছাত্রদলের আগের কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক তরিকুল ইসলাম টিটু ও বর্তমান কমিটির গাজী রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজের নেতৃত্বে পদবঞ্চিত কয়েকশ’ নেতাকর্মীও কার্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণের মধ্যে আগের কমিটির সহ-সভাপতি তরুণ দে, জাভেদ হাসান স্বাধীন, যুগ্ম-মহাসচিব ফেরদৌস আহমেদ মুন্না, নূরুজ্জামান মুকিত লিংকন, মাহবুবুল আজম, আবদুল মান্নান ফরহাদ, আহসানুল হক রুবেল, এমরান হোসেন মানিক, শামসুজ্জোহা সুমন, জসীম উদ্দিন খান, রাকিবুল ইসলাম রয়েল, মশিউর রহমান মিশু, রফিকুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম সবুজসহ আরও কয়েকজন পদবঞ্চিত নেতা তাদের সঙ্গে যোগ দেন। এ সময় দুপক্ষ পাশাপাশি অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল কার্যালয়ের নিচে এসে কয়েক দফা বিদ্রোহীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। প্রথম দফায় রিজভী তাদের বলেন, এমন কোনো কাজ করা যাবে না যাতে সরকার সুযোগ পায়। এরপর তিনি কার্যালয়ে চলে যান। বেলা সোয়া ২টার দিকে আলাল ও সোহেলকে সঙ্গে নিয়ে রিজভী আবার নিচে নামেন। এ সময় তিনি পদবঞ্চিতদের চলে যেতে বললে তারা বলেন, বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা চলে গেলে তারাও যাবেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ হয়ে তারা রিজভীকে ঘিরে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। এ সময় রিজভীও ক্ষুব্ধ হয়ে শার্টের বোতাম খুলে দিয়ে বলেন, ‘মারো, আমাকে মারো।’ বিদ্রোহীরা এ্যানী-টুকুকে বহিষ্কার ও বর্তমান কমিটি বাতিলের দাবি জানান। এ সময় বর্তমান কমিটির নেতাকর্মী ও বিদ্রোহীরা উস্কানিমূলক স্লোগান দিতে থাকে। রিজভী আহমেদের সঙ্গে কথাবার্তা চলাকালে হঠাৎ পরপর দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় পদবঞ্চিতরা। এ সময় বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা প্রতিরোধের চেষ্টা করলে পদবঞ্চিতরা তাদের ধাওয়া দেয়। নতুন কমিটির সদস্যরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নেয়। পরে পদবঞ্চিতরা কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দিলে অবরুদ্ধে হয়ে পড়েন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। আনুমানিক আড়াইটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে স্লোগান দেয় বিক্ষুব্ধরা। তাদের হামলা ও ককটেলের আঘাতে আহতরা কার্যালয়ে অবস্থান নেন। পরে অবশ্য পদবঞ্চিতদের সহযোগিতায় আহত নতুন কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক আজিজ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদসহ সংগঠনের কর্মী কাউসার, শফিক, মাসুম, শিমুলসহ বেশ কয়েকজনকে অ্যাম্বুলেন্স ও রিকশাযোগে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে আহত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি তারেকুজ্জামান তারেক ক্ষত নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়েই অবস্থান করেন। ককটেলের আঘাতে কারও পা ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। বিক্ষিপ্তভাবে কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি কয়েকজনকে ধরে মারধর করেন বিদ্রোহীরা। এ সময় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তিনতলার ব্রিফিং রুমের সামনের গ্লাস ভেঙে যায়। ঘটনার সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রিজভী আহমেদ, ঢাকা মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ছাত্র সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক দল সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল বারী বাবু, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা কার্যালয়ের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। অবরুদ্ধ অবস্থায় কেন্দ্রীয় অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নবগঠিত কমিটির সভাপতি রাজিব আহসান অভিযোগ করেন, এসবের পেছনে সরকারের ইন্ধন রয়েছে। এদিকে বিকাল ৫টার কিছু পরে পদবঞ্চিতদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মির্জা ফখরুল। বিদ্রোহীদের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন আগের কমিটির নেতা তরিকুল ইসলাম টিটু, মশিউর রহমান মিশু, শামসুজ্জোহা সুমন, হাবিবুর রহমান সুমন ও রাকিবুল ইসলাম রয়েল। তাদের সঙ্গে নতুন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী রওনাকুল ইসলাম রিয়াজও ছিলেন, যিনি পদ না পাওয়াদের বিক্ষোভে প্রথম থেকে শামিল রয়েছেন। আধা ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে ছাত্রদলের সাবেক নেতা রিজভী আহমেদ, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ও যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালও উপস্থিত ছিলেন। এ বৈঠকের সময় নতুন কমিটির নেতারা ভবনের চতুর্থ তলায় অবস্থান করেন। বৈঠকের পর ফখরুল তাদের ‘চুপ’ থাকার নির্দেশ দেন। সন্ধ্যা ৬টার পর নতুন কমিটির নেতাদের নিয়ে তিনি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। বৈঠকের পর বাইরে এসে বিক্ষুব্ধদের পক্ষে তরিকুল ইসলাম টিটু ও গাজী রিয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, তারা তাদের ক্ষোভের কথা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে জানিয়েছেন। তিনি বিষয়টি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে তুলবেন বলে প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনার পর কাল (আজ সোমবার) পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে। সে পর্যন্ত সব বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত থাকবে বলে জানান ছাত্রদলের এই বিদ্রোহী নেতারা। এদিকে কমিটি বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনের নেপথ্যে থেকে কাজ করছেন বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন। গতকাল তারা কার্যালয়ের সামনে প্রকাশ্যে ছিলেন না। তবে সন্ধ্যার দিকে খোকন মোটরসাইকেলে করে সেখানে আসেন। এ সময় পদবঞ্চিত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে তিনি চলে যান। তবে গতকাল ইসহাককে সেখানে দেখা যায়নি। এদিকে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কমিটি নিয়ে চলমান বিদ্রোহ নিরসনে কাজ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে পদবঞ্চিত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন এ্যানী ও টুকু। অঙ্গসংগঠনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়ারও আশ্বাস দেয়া হচ্ছে। তাদের আশ্বাসে কয়েকজন আন্দোলন থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। কমিটিতে পদ পেয়ে যারা সংক্ষুব্ধ হয়েছেন তাদেরও নানাভাবে নিবৃত্ত করার চেষ্টা চলছে। যারা বর্তমানে আন্দোলনে রয়েছেন তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। নতুন কমিটিতে কয়েকজনকে ‘কো-অপ্ট’ করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। পদবঞ্চিতদের সম্মতি পেলে শিগগিরই কয়েকজনকে নতুন কমিটির সহ-সভাপতি পদ দেয়া হতে পারে। এ্যানীও সে রকম কথাই বলেছেন যুগান্তরকে। তিনি বলেন, নতুন আংশিক পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যোগ্য কেউ যদি বাদ পড়েন তাদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কিনা সে ব্যাপারে তাদের চিন্তাভাবনা রয়েছে।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Monday, October 20, 2014
পদবঞ্চিতদের সহিংসতা:যুগান্তর
চুর করে বিক্ষুব্ধরা। এ সময় নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে পুলিশসহ আইনশৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন নীরব। হামলার একপর্যায়ে বিএনপি কার্যালয়ের মূল গেটের সঙ্গে স্থাপিত জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্যঘেরা কাচের বেষ্টনী ভাংচুর করা হয়। বর্তমান কমিটি ও বিদ্রোহীরা এর জন্য পরস্পরকে দোষারোপ করেছেন। শনিবার থেকেই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছিল ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের দখলে। তারা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় অফিসে তালা লাগিয়ে দেন। ওইদিন বর্তমান কমিটির কেউ কার্যালয়ে যাননি। গতকাল সকালে বর্তমান কমিটির সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের নেতৃত্বে কয়েকশ’ নেতাকর্মী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন। তারা চারতলায় অবস্থিত কার্যালয়ে লাগানো তালা ভেঙে সেখানে প্রবেশ করেন। কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেন বর্তমান কমিটির নেতা ও তাদের সমর্থকরা। বেলা পৌনে ১টার দিকে ছাত্রদলের আগের কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক তরিকুল ইসলাম টিটু ও বর্তমান কমিটির গাজী রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজের নেতৃত্বে পদবঞ্চিত কয়েকশ’ নেতাকর্মীও কার্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণের মধ্যে আগের কমিটির সহ-সভাপতি তরুণ দে, জাভেদ হাসান স্বাধীন, যুগ্ম-মহাসচিব ফেরদৌস আহমেদ মুন্না, নূরুজ্জামান মুকিত লিংকন, মাহবুবুল আজম, আবদুল মান্নান ফরহাদ, আহসানুল হক রুবেল, এমরান হোসেন মানিক, শামসুজ্জোহা সুমন, জসীম উদ্দিন খান, রাকিবুল ইসলাম রয়েল, মশিউর রহমান মিশু, রফিকুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম সবুজসহ আরও কয়েকজন পদবঞ্চিত নেতা তাদের সঙ্গে যোগ দেন। এ সময় দুপক্ষ পাশাপাশি অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল কার্যালয়ের নিচে এসে কয়েক দফা বিদ্রোহীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। প্রথম দফায় রিজভী তাদের বলেন, এমন কোনো কাজ করা যাবে না যাতে সরকার সুযোগ পায়। এরপর তিনি কার্যালয়ে চলে যান। বেলা সোয়া ২টার দিকে আলাল ও সোহেলকে সঙ্গে নিয়ে রিজভী আবার নিচে নামেন। এ সময় তিনি পদবঞ্চিতদের চলে যেতে বললে তারা বলেন, বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা চলে গেলে তারাও যাবেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ হয়ে তারা রিজভীকে ঘিরে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। এ সময় রিজভীও ক্ষুব্ধ হয়ে শার্টের বোতাম খুলে দিয়ে বলেন, ‘মারো, আমাকে মারো।’ বিদ্রোহীরা এ্যানী-টুকুকে বহিষ্কার ও বর্তমান কমিটি বাতিলের দাবি জানান। এ সময় বর্তমান কমিটির নেতাকর্মী ও বিদ্রোহীরা উস্কানিমূলক স্লোগান দিতে থাকে। রিজভী আহমেদের সঙ্গে কথাবার্তা চলাকালে হঠাৎ পরপর দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় পদবঞ্চিতরা। এ সময় বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা প্রতিরোধের চেষ্টা করলে পদবঞ্চিতরা তাদের ধাওয়া দেয়। নতুন কমিটির সদস্যরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নেয়। পরে পদবঞ্চিতরা কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দিলে অবরুদ্ধে হয়ে পড়েন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। আনুমানিক আড়াইটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে স্লোগান দেয় বিক্ষুব্ধরা। তাদের হামলা ও ককটেলের আঘাতে আহতরা কার্যালয়ে অবস্থান নেন। পরে অবশ্য পদবঞ্চিতদের সহযোগিতায় আহত নতুন কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক আজিজ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদসহ সংগঠনের কর্মী কাউসার, শফিক, মাসুম, শিমুলসহ বেশ কয়েকজনকে অ্যাম্বুলেন্স ও রিকশাযোগে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে আহত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি তারেকুজ্জামান তারেক ক্ষত নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়েই অবস্থান করেন। ককটেলের আঘাতে কারও পা ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। বিক্ষিপ্তভাবে কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি কয়েকজনকে ধরে মারধর করেন বিদ্রোহীরা। এ সময় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তিনতলার ব্রিফিং রুমের সামনের গ্লাস ভেঙে যায়। ঘটনার সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রিজভী আহমেদ, ঢাকা মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ছাত্র সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক দল সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল বারী বাবু, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা কার্যালয়ের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। অবরুদ্ধ অবস্থায় কেন্দ্রীয় অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নবগঠিত কমিটির সভাপতি রাজিব আহসান অভিযোগ করেন, এসবের পেছনে সরকারের ইন্ধন রয়েছে। এদিকে বিকাল ৫টার কিছু পরে পদবঞ্চিতদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মির্জা ফখরুল। বিদ্রোহীদের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন আগের কমিটির নেতা তরিকুল ইসলাম টিটু, মশিউর রহমান মিশু, শামসুজ্জোহা সুমন, হাবিবুর রহমান সুমন ও রাকিবুল ইসলাম রয়েল। তাদের সঙ্গে নতুন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী রওনাকুল ইসলাম রিয়াজও ছিলেন, যিনি পদ না পাওয়াদের বিক্ষোভে প্রথম থেকে শামিল রয়েছেন। আধা ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে ছাত্রদলের সাবেক নেতা রিজভী আহমেদ, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ও যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালও উপস্থিত ছিলেন। এ বৈঠকের সময় নতুন কমিটির নেতারা ভবনের চতুর্থ তলায় অবস্থান করেন। বৈঠকের পর ফখরুল তাদের ‘চুপ’ থাকার নির্দেশ দেন। সন্ধ্যা ৬টার পর নতুন কমিটির নেতাদের নিয়ে তিনি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। বৈঠকের পর বাইরে এসে বিক্ষুব্ধদের পক্ষে তরিকুল ইসলাম টিটু ও গাজী রিয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, তারা তাদের ক্ষোভের কথা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে জানিয়েছেন। তিনি বিষয়টি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে তুলবেন বলে প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনার পর কাল (আজ সোমবার) পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে। সে পর্যন্ত সব বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত থাকবে বলে জানান ছাত্রদলের এই বিদ্রোহী নেতারা। এদিকে কমিটি বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনের নেপথ্যে থেকে কাজ করছেন বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন। গতকাল তারা কার্যালয়ের সামনে প্রকাশ্যে ছিলেন না। তবে সন্ধ্যার দিকে খোকন মোটরসাইকেলে করে সেখানে আসেন। এ সময় পদবঞ্চিত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে তিনি চলে যান। তবে গতকাল ইসহাককে সেখানে দেখা যায়নি। এদিকে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কমিটি নিয়ে চলমান বিদ্রোহ নিরসনে কাজ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে পদবঞ্চিত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন এ্যানী ও টুকু। অঙ্গসংগঠনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়ারও আশ্বাস দেয়া হচ্ছে। তাদের আশ্বাসে কয়েকজন আন্দোলন থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। কমিটিতে পদ পেয়ে যারা সংক্ষুব্ধ হয়েছেন তাদেরও নানাভাবে নিবৃত্ত করার চেষ্টা চলছে। যারা বর্তমানে আন্দোলনে রয়েছেন তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। নতুন কমিটিতে কয়েকজনকে ‘কো-অপ্ট’ করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। পদবঞ্চিতদের সম্মতি পেলে শিগগিরই কয়েকজনকে নতুন কমিটির সহ-সভাপতি পদ দেয়া হতে পারে। এ্যানীও সে রকম কথাই বলেছেন যুগান্তরকে। তিনি বলেন, নতুন আংশিক পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যোগ্য কেউ যদি বাদ পড়েন তাদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কিনা সে ব্যাপারে তাদের চিন্তাভাবনা রয়েছে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment