োমধ্যে সংঘটিত অনিয়মের কোনো দায় শিকার করেননি ব্যাংকের পরিচালকরা। তারা দাবি করেছেন, এসব অনিয়মের কোনো কিছুই তারা জানেন না। তবে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে যত অনিয়ম হয়েছে তার দায় পরিচালনা পর্ষদ এড়াতে পারে না। অনিয়মের দায় পরিচালকদেরই নিতে হবে। এনবিএলের এক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ন্যাশনাল ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৮ মাসে পরিচালনা পর্ষদের সাতটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময়েই ব্যাংকে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এসব সভায় একটি পরিবারের কয়েকজন পরিচালক ছাড়া তেমন কেউ উপস্থিত থাকতেন না। যারা উপস্থিত থাকতেন তারা প্রভাবশালীদেরই অনুসারী ছিলেন। বেশির ভাগ পরিচালক উপস্থিত থাকতেন না। ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শকের উপস্থিতিতে সভায় ১৪ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদের ১০ জন উপস্থিত ছিলেন। এ দিকে ১৪ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদের ছয়জনই একই পরিবারের। অথচ ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদে একই পরিবারের দুই সদস্যের অধিক পরিচালক থাকতে পারেন না। ইতোমধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের শিকদার পরিবারের ছয়জনের মধ্যে দুইজন রেখে বাকিদের অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রাথমিকভাবে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে ব্যাংকটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত কার্যকরের সময়সীমা ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ন্যাশনাল ব্যাংকে ইতোমধ্যে তিন হাজার ১০০ কোটি টাকার অনিয়মের চিত্র উদঘাটন করা হয়েছে। বেশির ভাগ অনিয়ম হয়েছে গুলশান, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও ঢাকার দিলকুশা শাখায়। এর ফলে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেছে। গত মার্চ শেষে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৬০৭ কোটি টাকা। জুন শেষে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় সাড়ে ৮০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে মন্দ ঋণই পৌনে ৫০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া ব্যাংকটি দুই হাজার তিন কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন করেছে। অবলোপনসহ ব্যাংকটির প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার সাড়ে ৮০০ কোটি টাকা। সূত্র জানায়, ন্যাশনাল ব্যাংকের গুলশান শাখায় বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালিত প্রাথমিক তদন্তে বড় ধরনের জালিয়াতি ধরা পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন এ নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করছে। এই শাখায় ৮টি প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারি প্রকাশ হয়ে পড়েছে। খাতুনগঞ্জ শাখায় নূরজাহান গ্রুপের নামে প্রায় ৮১৫ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে, যার পুরোটাই এখন খেলাপি। চট্টগ্রামের আরো একটি গ্রুপের নামে প্রায় হাজার কোটি টাকা, ঢাকার একটি বড় শিল্প গ্রুপের নামে সমপরিমাণ টাকার ঋণ জালিয়াতির ঘটনাও ধরা পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অপর একটি তদন্তে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালকদের নামে-বেনামে বেশ কিছু বেআইনি কর্মকাণ্ড শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, কয়েকজন পরিচালকের নামে বেআইনি ঋণ সুবিধা দেয়া, ঋণের বিপরীতে সুদ মওকুফ, এককালীন নগদ অর্থ পরিশোধ ছাড়াই খেলাপি ঋণ নবায়ন সুবিধা দেয়া, স্বল্পমেয়াদি ঋণকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণে রূপান্তর করা। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডির কাছে সম্প্রতি একটি চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Wednesday, October 22, 2014
ন্যাশনাল ব্যাংকের ৩ হাজার কোটি টাকার অনিয়ম:নয়াদিগন্ত
োমধ্যে সংঘটিত অনিয়মের কোনো দায় শিকার করেননি ব্যাংকের পরিচালকরা। তারা দাবি করেছেন, এসব অনিয়মের কোনো কিছুই তারা জানেন না। তবে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে যত অনিয়ম হয়েছে তার দায় পরিচালনা পর্ষদ এড়াতে পারে না। অনিয়মের দায় পরিচালকদেরই নিতে হবে। এনবিএলের এক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ন্যাশনাল ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৮ মাসে পরিচালনা পর্ষদের সাতটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময়েই ব্যাংকে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এসব সভায় একটি পরিবারের কয়েকজন পরিচালক ছাড়া তেমন কেউ উপস্থিত থাকতেন না। যারা উপস্থিত থাকতেন তারা প্রভাবশালীদেরই অনুসারী ছিলেন। বেশির ভাগ পরিচালক উপস্থিত থাকতেন না। ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শকের উপস্থিতিতে সভায় ১৪ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদের ১০ জন উপস্থিত ছিলেন। এ দিকে ১৪ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদের ছয়জনই একই পরিবারের। অথচ ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদে একই পরিবারের দুই সদস্যের অধিক পরিচালক থাকতে পারেন না। ইতোমধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের শিকদার পরিবারের ছয়জনের মধ্যে দুইজন রেখে বাকিদের অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রাথমিকভাবে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে ব্যাংকটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত কার্যকরের সময়সীমা ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ন্যাশনাল ব্যাংকে ইতোমধ্যে তিন হাজার ১০০ কোটি টাকার অনিয়মের চিত্র উদঘাটন করা হয়েছে। বেশির ভাগ অনিয়ম হয়েছে গুলশান, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও ঢাকার দিলকুশা শাখায়। এর ফলে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেছে। গত মার্চ শেষে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৬০৭ কোটি টাকা। জুন শেষে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় সাড়ে ৮০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে মন্দ ঋণই পৌনে ৫০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া ব্যাংকটি দুই হাজার তিন কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন করেছে। অবলোপনসহ ব্যাংকটির প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার সাড়ে ৮০০ কোটি টাকা। সূত্র জানায়, ন্যাশনাল ব্যাংকের গুলশান শাখায় বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালিত প্রাথমিক তদন্তে বড় ধরনের জালিয়াতি ধরা পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন এ নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করছে। এই শাখায় ৮টি প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারি প্রকাশ হয়ে পড়েছে। খাতুনগঞ্জ শাখায় নূরজাহান গ্রুপের নামে প্রায় ৮১৫ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে, যার পুরোটাই এখন খেলাপি। চট্টগ্রামের আরো একটি গ্রুপের নামে প্রায় হাজার কোটি টাকা, ঢাকার একটি বড় শিল্প গ্রুপের নামে সমপরিমাণ টাকার ঋণ জালিয়াতির ঘটনাও ধরা পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অপর একটি তদন্তে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালকদের নামে-বেনামে বেশ কিছু বেআইনি কর্মকাণ্ড শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, কয়েকজন পরিচালকের নামে বেআইনি ঋণ সুবিধা দেয়া, ঋণের বিপরীতে সুদ মওকুফ, এককালীন নগদ অর্থ পরিশোধ ছাড়াই খেলাপি ঋণ নবায়ন সুবিধা দেয়া, স্বল্পমেয়াদি ঋণকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণে রূপান্তর করা। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডির কাছে সম্প্রতি একটি চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment