কেনিয়ায় বন্দুকধারীরা একটি বাসে হামলা চালিয়ে ২৮ জন অমুসলিম যাত্রীকে হত্যা করেছে। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মান্দেরা কাউন্টি এলাকায় গতকাল শনিবার ওই হামলা হয়। জঙ্গি সংগঠন আল-শাবাব এর দায়িত্ব স্বীকার করেছে। খবর এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসির। বন্দুকধারীরা মান্দেরা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে বাসটি আটকানোর পর রাস্তা থেকে ভেতরের দিকে নিয়ে যায়। এর ৬০ জন যাত্রী রাজধানী নাইরোবি যাচ্ছিলেন। কেনিয়ার একজন কর্মকর
্তা স্থানীয় ডেইলি নেশন পত্রিকাকে বলেন, বাসযাত্রীদের কাছে পবিত্র কোরআনের আয়াত শুনতে চাওয়া হয়েছিল। যারা বলতে পারেনি, তাদের হত্যা করা হয়। ঘটনার পর পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সরকারি নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ওই হামলায় জড়িত ‘অপরাধী চক্রকে’ ধরার চেষ্টা করছে। ২৮ জন বাসযাত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন আল-শাবাব। সংগঠনটির একজন মুখপাত্র বলেন, গত সপ্তাহে মোম্বাসা শহরের কয়েকটি মসজিদে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের প্রতিশোধ হিসেবে তারা ওই হামলা চালিয়েছে। সংগঠনটির মুখপাত্র মোহাম্মদ রেইজ এএফপির কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মান্দেরায় মুজাহিদরা সফল একটি অভিযান সম্পন্ন করেছে। এতে ২৮ জন ধর্মযোদ্ধা (ক্রুসেডার) প্রাণ হারিয়েছে। কেনিয়ায় মুসলিম ভাইদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের প্রতিশোধ হিসেবে এই অভিযান চালানো হয়েছে।’ মান্দেরা এলাকাটির অবস্থান সোমালিয়া ও ইথিওপিয়া সীমান্তের কাছাকাছি। সেখানে আগেও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়েছে। মান্দেরার সরকারি কর্মকর্তা আবদুল্লাহি আবদিরাহমান বলেন, ঘটনাস্থলে প্রায়ই সন্ত্রাসী হামলা হলেও সরকার বিষয়টি উপেক্ষা করেছে। সোমালিয়ায় তৎপর জঙ্গি সংগঠন আল-শাবাব ২০১১ সাল থেকে কেনিয়ায় একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আসছে। মনে করা হয়, সোমালিয়ায় জঙ্গি দমন অভিযানে আফ্রিকান ইউনিয়নের বাহিনীতে কেনিয়ার যোগ দেওয়া এর অন্যতম কারণ। কেনিয়ার উপকূলীয় শহর মোম্বাসায় অনেক হামলা চালিয়েছে আল-শাবাব। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সেখানে উত্তেজনা চলছে। চরমপন্থীদের সঙ্গে যোগসূত্রের অভিযোগ এনে নিরাপত্তা বাহিনী গত কয়েক দিনে সেখানকার মসজিদগুলোতে অভিযান চালায়। এ সময় একটি মসজিদে অস্ত্র ও গ্রেনেড পাওয়ার পর সেটিসহ চারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে স্থানীয় মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। নাইরোবির অভিজাত একটি বিপণিকেন্দ্রে গত বছরের সেপ্টেম্বরে আল-শাবাবের হামলায় অন্তত ৬৭ জন নিহত হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের সময়ও বন্দুকধারীরা অমুসলিমদের আলাদাভাবে চিহ্নিত করেছিল।
No comments:
Post a Comment