রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া নবজাতকটি চার দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে হাসপাতালের এক আয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন রাজশাহীর পবা উপজেলার ঘোলহাড়িয়া গ্রামের জালাল উদ্দিন (২৫), তাঁর স্ত্রী খালেদা বেগম (২২), তাঁর শাশুড়ি সখিনা বেগম (৫৫) ও হাসপাতালের আয়া নার্গিস সুলতানা (২৫)। পুলিশ জানিয়েছে, হাস
পাতালের আয়া নার্গিস সুলতানার সহযোগিতায় খালেদা বেগম গত সোমবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে নবজাতকটিকে চুরি করে নিয়ে যান। তবে আয়া চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গতকাল সন্ধ্যায় রাজশাহী নগরের শাহ মখদুম থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে উদ্ধার হওয়া শিশুসহ আসামিদের সাংবাদিকদের মুখোমুখি করা হয়। সেখানেই শিশুটিকে মা-বাবার কোলে তুলে দেওয়া হয়। এ সময় রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, উপকমিশনার (সদর) তানভীর হায়দার চৌধুরী, উপকমিশনার (পশ্চিম) শাহ গোলাম মাহমুদ, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমানসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তদন্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান শিশুটি উদ্ধারের ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, শিশুটিকে একটি অটোরিকশায় করে পবা উপজেলার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে- একজন প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে তারা এ তথ্য পেয়ে পুলিশ সোর্স নিয়োগ করে। গতকাল সকালে তারা নিশ্চিত হন যে শিশুটি পবার ভবানীপুর গ্রামে রয়েছে। অনুসন্ধান চালিয়ে তারা খালেদা বেগমের মায়ের বাড়িতে গিয়ে শিশুটিকে পেয়ে যায়। শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা সাংবাদিকদের সামনে স্বীকার করেন খালেদা। তিনি বলেন, আয়া নার্গিস সুলতানা এ ব্যাপারে তাঁকে সহযোগিতা করেন। তবে এ জন্য নার্গিস তাঁর কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়নি। খালেদা বেগম দাবি করেন, সন্তানের মায়ায় তিনি শিশুটিকে চুরি করেছেন। তাঁর দুটি সন্তানের একটি কিছু দিন আগে মারা গেছে বলে দাবি করেন। আগে থেকেই শিশুটির বাবা তরিকুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে শিশুর মা রুবিনা খাতুনকে হাসপাতাল থেকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। তখনই শিশুটিকে পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শামসুদ্দিন তাঁর মায়ের কোলে তুলে দেন। এ সময় শিশুটিকে পাওয়ার আনন্দে তার মা কান্নায় ভেঙে পড়েন। মা রুবিনা বলেন, ‘আমার হারানো ধন আমি ফিরে পেয়েছি। আজ আর এর চেয়ে আনন্দের কিছু নেই।’ খালেদা বেগমের দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তদন্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, তাঁর এ বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য নয়। পুলিশ সন্তান চুরির প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। গত সোমবার জন্মের আাঁ ঘণ্টার মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে শিশুটি চুরি হয়ে যায়। শিশুটির বাবার বাড়ি গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট পৌর এলাকার সুরশুনিপাড়া মহল্লায়। আগের দিন তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চুরির দিন রাতেই নগরের রাজপাড়া থানায় একটি মামলা করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
No comments:
Post a Comment