Sunday, January 4, 2015

গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ খালেদা:কালের কন্ঠ

বছর ঘুরে আবার সেই ৫ জানুয়ারি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এই দিনটিকে ঘিরে রাজনীতিতে চলছে উত্তেজনা, সঙ্গে চাপা উদ্বেগ ও শঙ্কা। দেশের মূল দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি আগামী
কাল নিজ নিজ কর্মসূচি পালনে অনড় অবস্থানে থেকে পরস্পরের বিরুদ্ধে সমানে হুংকার ছেড়ে যাচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগ সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে, তারা ওই দিন নয়াপল্টনে সমাবেশ করবেই। দুই পক্ষের এই রণপ্রস্তুতিতে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যেই গতকাল শনিবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়া বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীকে পুলিশ আটক করে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে অসুস্থ রিজভীকে দেখতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুলশানের কার্যালয় থেকে বের হতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এমনকি বাসায় যেতে চাইলেও খালেদাকে বের হতে দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। এ ছাড়া গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় ও বাসার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, খালেদা জিয়াকে গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার স্বার্থেই বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এটি তাদের রুটিন ওয়ার্ক। রাত ২টার দিকে বিএনপির মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে বালুর ট্রাক বা অন্য কিছু দিয়েও বিএনপিকে আটকানো যাবে না। ৫ জানুয়ারির কর্মসূচি আমরা পালন করবই।’ দুই পক্ষের অনড় অবস্থান সম্পর্কে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খানের মতে, বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে সরকারই পরিস্থিতি উত্তেজনাকর করে তুলছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত। তিনি বলেন, ‘দুই দলের পাল্টাপাল্টি অবস্থান ও প্রস্তুতি দেখে আমরা নাগরিকরা শঙ্কায় আছি। কী হয় জানি না।’ তিনি বলেন, খালেদা জিয়া মাঠে নামলে পরিস্থিতি সংঘাতে রূপ নিতে পারে। জানা গেছে, পুলিশ-র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে বিএনপিকে ওই দিন রাজপথে নামতে না দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের দিকেও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নজর রাখছে। পাশাপাশি দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগ ওই দিন রাজধানীতে ১৬টি স্পটে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৫ জানুয়ারি রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা নয়াপল্টনে যাওয়ার চেষ্টা করবে। দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও নেতা-কর্মীদের নিয়ে সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে এখনো অনড়। এর জন্য মহানগর বিএনপির পাশাপাশি দলটির সব অঙ্গসংগঠনকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তার এড়ানোর কৌশল হিসেবে আজ রবিবার পর্যন্ত তারা আত্মগোপনে থাকবে। শুক্রবার থেকেই দলটির অধিকাংশ নেতা-কর্মীর মোবাইল ফোন বন্ধ। সোমবার তারা প্রকাশ্যে আসবে এবং প্রয়োজনে গ্রেপ্তার হবে। আর পরিস্থিতি সংঘাতে গড়ালে ২০ দল টানা ৭২ (৬, ৭ ও ৮ জানুয়ারি) ঘণ্টা হরতালের ডাক দিতে পারে। রিজভী আটক : রাত ৯টার দিকে পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রিজভী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে রাত ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এ এস এম রায়হানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল গিয়ে রিজভীকে পরীক্ষা করে। তারা তাঁকে বিশ্রামে থাকতে বলে। হাসপাতালে নিতে হবে কি না সে ব্যাপারে ২৪ ঘণ্টা পর জানানো হবে বলে তারা জানায়। এর ঘণ্টাখানেক পর রাত ১২টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গিয়ে রিজভীকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানায়। তবে পরে জানা যায়, তাঁকে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রিজভীর স্ত্রী এসে গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হন। তবে পল্টন থানার ওসি মোর্শেদ আলম বলেন, রিজভী গত রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে বিএনপি কার্যালয় থেকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁকে আটক করা হয়নি। বিএনপি কার্যালয়ে তালা : এদিকে রাত সোয়া ১২টার দিকে এসআই জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে পল্টন থানার সিভিল টিম বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে গিয়ে নেতা-কর্মী ও কর্মচারীসহ সবাইকে বের করে দেয়। কার্যালয়ের কর্মচারী রুস্তমকে দিয়ে তালা লাগিয়ে গোয়েন্দারা চলে যান। তবে বাইরে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। খালেদা জিয়া অবরুদ্ধ : রাত ১টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস সাংবাদিকদের জানান, অসুস্থ রিজভীকে দেখতে খালেদা জিয়া রাত সাড়ে ১১টার দিকে গুলশান কার্যালয় থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ গুলশানের কার্যালয় ঘিরে রাখে। শিমুল বিশ্বাস আরো জানান, পরে খালেদা জিয়া বাসায় যেতে চাইলেও পুলিশ নিষেধ করে। কিন্তু এরই মধ্যে খালেদা জিয়া কার্যালয়ের দোতলা থেকে নিচে নেমে এসে গাড়িতে আধাঘণ্টা বসে থাকলেও পুলিশ গাড়ি বের হতে দেয়নি। পরে খালেদা জিয়া আবার কার্যালয়ে ফিরে যান। রাত দেড়টার দিকে খালেদা জিয়ার গৃহপরিচারিকা তাঁর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দুটি লাগেজ নিয়ে গুলশান কার্যালয়ে প্রবেশ করে। খালেদা রাতে কার্যালয়েই অবস্থান নিয়ে থাকবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। রাত ২টার দিকে সেলিমা রহমান, সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া, রেহানা আক্তার রানু, রাশেদা আক্তার হীরা, নিলুফার আক্তার মনিসহ মহিলা দলের কয়েকজন নেত্রী গুলশান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা বলেন, দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। থাকলে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে এভাবে বাধা দেওয়া হতো না। তাঁরা জানান, যত কিছুই করা হোক ৫ জানুয়ারির সমাবেশ হবেই। সর্বশেষ রাত ২টার দিকে এক প্লাটুন মহিলা পুলিশসহ চার-পাঁচ প্লাটুন পুলিশ খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় ঘিরে রাখতে দেখা গেছে। বাসায় যাওয়ার পথটি ছাড়া গুলশান কার্যালয় থেকে অন্য কোথাও বের হওয়ার সবগুলো রাস্তা পুলিশের গাড়ি রেখে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের গুলশান জোনের উপকমিশনার লুৎফুল কবীর বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অফিস ও বাসভবন এলাকায় এমনিতেই বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হয়। তবে ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে গত রাতে আরো বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। এটা রুটিন ওয়ার্ক। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে বিএনপি কৌশল নিয়েছিল। রিজভীকে দেখার নাম করে খালেদা জিয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নিয়ে থাকবেন, এমন খবর ছিল তাঁদের হাতে। এ কারণেই খালেদা জিয়াকে যেতে দেওয়া হয়নি। এর আগে বিএনপি সূত্র জানায়, পুলিশ ও র‌্যাবের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে সরকার গত বছরের ২৯ ডিসেম্বরের মতো বাধা সৃষ্টি করতে পারে। সে হিসাবেই কর্মকৌশল ঠিক করেছে দলটি। গতকাল ও আজ অনেকেই আত্মগোপনে থাকলেও কাল ঝুঁকি নিয়ে সবাই বের হবে। আন্দোলনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও আত্মগোপনে থাকা দলটির একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন, যেকোনো মূল্যে তাঁরা ৫ জানুয়ারি মাঠে নামবেন। জানতে চাইলে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কোনো সংঘাত, সংঘর্ষে জড়াতে নয়; গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের জন্য ৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০ দল মাঠে নামবে। তিনি বলেন, বিএনপি বা ২০ দল নিরস্ত্র; কিন্তু সরকারের হাতে থাকা সব বাহিনী সশস্ত্র। এ অবস্থায়ই নিরস্ত্র জনগণকে নিয়ে আমরা ৫ জানুয়ারির কর্মসূচি পালন করব।’ এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘৫ জানুয়ারি আমরা সরকার পতনের ঘোষণা দেইনি। বিএনপি ওই দিন শুধু গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করবে। অথচ এ কর্মসূচিও সরকারি দল তাদের নেতা-কর্মীদের দিয়ে প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে।’ পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে বড় একটি রাজনৈতিক দলকে এভাবে কর্মসূচি পালনে বাধা দেওয়ার নজির নেই বলে দাবি করেন ফখরুল। স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে সংঘাতময় পরিস্থিতি সরকার নিজে ডেকে এনেছে। কারণ বিএনপি জনসভা করতে চেয়েছে; এটা একটি রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। ফলে পরিস্থিতি যাই হোক এর দায়দায়িত্ব সরকারের। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের মতে, পরিস্থিতি এ মুহূর্তে সম্ভবত গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে সংঘাতময়। এ পরিস্থিতি সরকারই সৃষ্টি করেছে। জনসভা না করতে দিলে বিএনপি কী করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার সমুচিত জবাব দেশের মানুষ যথাসময়ে দেবে। প্রধান শরিক জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে জানান, তাঁর দলের প্রস্তুতি আছে। অবশ্যই সবাই মাঠে নামবে। শরিক দল এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে আমরা অবশ্যই রাজপথে নামব।’ রাজধানীতে ১৬ স্পটে থাকবে ক্ষমতাসীনরা প্রশাসনিকভাবে বিএনপিকে মোকাবিলা করার পাশাপাশি ৫ জানুয়ারি রাজধানীর রাজপথ দখলে রাখতে মাঠে থাকবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। ঢাকা মহানগরীতে দুপুর আড়াইটায় একযোগে ১৬টি স্থানে আনন্দ শোভাযাত্রা ও সমাবেশ করবে দলটি। এর জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের নিয়ে ১৬টি টিম গঠন করা হয়েছে। মিরপুরের পূরবী সিনেমা হল পয়েন্টে নেতৃত্ব দেবেন ড. আবদুর রাজ্জাক, এস এম কামাল হোসেন ও ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা। শ্যামপুর-জুরাইন রেলগেট এলাকায় থাকবেন আহমদ হোসেন, মমতাজ উদ্দিন মেহেদী, এনামুল হক শামীম ও অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম। ডেমরা-যাত্রাবাড়ী মাঠে থাকবেন মতিয়া চৌধুরী, নুরুল ইসলাম নাহিদ ও হাবিবুর রহমান মোল্লা। বাড্ডা-রামপুরা পেট্রলপাম্পে থাকবেন ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন ও এ কে এম রহমত উল্লাহ। ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে থাকবেন মোহাম্মদ নাসিম, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, দেওয়ান শফিউল আরেফীন টুটুল, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস; মিরপুর-১ নম্বর গোলচত্বরে থাকবেন আমির হোসেন আমু, আখতারুজ্জামান ও আসলামুল হক। লালবাগে থাকবেন তোফায়েল আহমেদ, শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ও মৃণাল কান্তি দাস। গুলশানে থাকবেন শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও আমিনুল ইসলাম আমিন। সূত্রাপুরে থাকবেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সুজিত রায় নন্দী। তেজগাঁয়ে থাকবেন কাজী জাফর উল্লাহ, ড. হাসান মাহমুদ ও আব্দুস ছাত্তার। সবুজবাগ-খিলগাঁওয়ে থাকবেন নূহ-উল-আলম লেনিন, আব্দুর রহমান ও অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান। উত্তরায় থাকবেন অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ও কর্নেল (অব.) ফারুক খান। কামরাঙ্গীরচরে নেতৃত্ব দেবেন সতীশ চন্দ্র রায়, ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। এ ছাড়া মোহাম্মদপুরে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ফরিদুন্নাহার লাইলী, মির্জা আজম এবং কাফরুলে ডা. দীপু মনি, স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, বি এম মোজাম্মেল হক থাকবেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন ওবায়দুল কাদের, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, হাবিবুর রহমান সিরাজ, অসীম কুমার উকিল প্রমুখ। এ সমাবেশে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা ওমর ফারুক চৌধুরী, হারুনুর রশীদ, অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওসার, পঙ্কজ নাথ, শুক্কুর মাহমুদ, সিরাজুল ইসলাম, এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সিদ্দিকী নাজমুল আলম উপস্থিত থাকবেন। আওয়ামী লীগ নেতারা বললেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই ৫ জানুয়ারি বিএনপি মাঠে নামবে না বলেই মনে করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। তাঁদের মতে, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে কর্মসূচি দিয়ে দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা যেমন মাঠে নামেননি, এবারও তা-ই হবে। ফলে ৫ জানুয়ারি নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই। তাঁরা জানান, ৫ জানুয়ারি সারা দেশে ব্যাপকভাবে কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। এদিন সকাল থেকেই দলটির নেতা-কর্মীরা রাজপথ দখলে নেবে। জনগণের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে এমন কোনো তৎপরতা কাউকেই চালাতে দেওয়া হবে না। সংঘাতের শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ। তিনি কালের কণ্ঠকে ‘বলেন, ৫ জানুয়ারি আমরা গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালন করব। এদিন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকবে। বিএনপি-জামায়াত মাঠে নামবে না। আগেও তারা অনেক কর্মসূচি দিয়ে নামেনি। এবারও একই ঘটনাই দেখা যাবে।’ গণমাধ্যমগুলো ৫ জানুয়ারি নিয়ে শঙ্কা তৈরি করছে মন্তব্য করে কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, ‘বিএনপি মাঠে না থাকলেও গণমাধ্যমগুলো এক ধরনের ভয়ের আবহ তৈরি করছে। বস্তুত এদিন কিছুই হবে না। শুধু রাজধানী নয়, সারা দেশেই আমাদের নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকবে।’ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, ‘আমরা মাঠে থাকব। জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তাদের জানমাল রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি আমরাও সচেষ্ট থাকব।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আগে কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। একই দিনে তাদের কর্মসূচি ঘোষণা যৌক্তিক নয়।’ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়েছে। তবে একই দিনে বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা করায় জনগণের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি তৈরি হয়ে থাকতে পারে। তাদের আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সরকার ও আওয়ামী লীগের দায়িত্ব জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে এমন তৎপরতা প্রতিরোধ করা। আমরা সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করব।’ ঢাকায় বিএনপি-জামায়াত মাঠে নামতে পারবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি জোটের আন্দোলন কথার কথা। তারা কর্মসূচি দিলেও মাঠে নামবে না। ঢাকায় এদিন প্রতিটি পাড়া-মহল্লা আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের দখলে থাকবে।

No comments:

Post a Comment