চট্টগ্রামের আসকারদীঘির পাড়ের ছালেহ জহুর সিটি করপোরেশন উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির ‘ক’ শাখায় মোট শিক্ষার্থী ৪৫ জন। গতকাল শনিবার উপস্থিত ছিল ২৬ জন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল ইসলাম জানান, অবরোধ শুরু হওয়ার পর শিক্ষার্থী উপস্থিতি ২০ শতাংশের মতো কমে গেছে। প্রতি ক্লাসেই ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকে। নগরের বাগমনিরাম আবদুর রশিদ সিটি করপোরেশন বালক উচ্চবিদ্যালয়ে গতকাল অষ্টম শ্রেণির ‘ক’ শাখায় উপস্
থিত ছিল ৩৯ জন শিক্ষার্থী। ক্লাসে মোট শিক্ষার্থী ৬০ জন। এ তথ্য জানিয়েছেন শ্রেণিশিক্ষক মিজানুর রহমান। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব দেব জানান, গতকাল বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে ৫০ শিক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ১০ জন। টানা অবরোধ ও হরতালে চট্টগ্রাম মহানগরের অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমেছে। শিক্ষকেরা বলছেন, আতঙ্ক ও বোমাবাজির কারণে অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাতে চান না। নগরের পুলিশ লাইন উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র অনিবার হোসেন জানায়, যখন-তখন বোমা মারা হয়। স্কুলে যেতে হয় ভয়ে ভয়ে। নগরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষার্থী উপস্থিতি গড়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমে গেছে। সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি কমেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজিজ উদ্দিন বলেন, অবরোধের কারণে নগরের স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কিছুটা কমেছে। হাইস্কুলে ৫ শতাংশের মতো, জুনিয়র স্কুলগুলোতে আরও বেশি কমেছে। অভিভাবকেরা উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম বলে জানান প্রধান শিক্ষক হাসমত জাহান। অবরোধে বিচ্ছিন্নভাবে চট্টগ্রামে ককটেল ও বোমাবাজির ঘটনা ঘটছে। ফেনীর দুই ছাত্র ককটেলে গুরুতর আহত হয়েছে। এর আগে ২০১৩ সালে নগরের মোমিন রোডে অপর্ণাচরণ স্কুলের এক ছাত্রী এবং বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেলের এক ছাত্র ককটেলে আহত হয়েছিলেন। এসব কারণে অভিভাবকেরা উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। নগরের বাওয়া স্কুলের অভিভাবক মাজেদা বেগম বলেন, ‘বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে ভয় লাগে। ককটেল, বোমাবাজি হয়। আবার না পাঠালেও ক্ষতি। এখন আমরা উভয় সংকটে পড়েছি।’ শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, হরতাল ও ছাত্র ধর্মঘটের কারণে গত সপ্তাহে নগরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে এক দিনের বেশি ক্লাস হয়নি। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে স্কুলগুলো এখন ছুটির দিনে ক্লাসের ব্যবস্থা করছে। সেন্ট মেরিস স্কুল, ফুলকি, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি (বাওয়া) স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ক্রাইস্ট চার্চসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটির দিনে ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে। বাওয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘অবরোধে ক্লাস হলেও হরতালে শিক্ষার্থীরা আসে না। তাই শুক্র ও শনিবার ক্লাসের ব্যবস্থা করেছি।’
No comments:
Post a Comment