মেলবোর্নের কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি বাংলাদেশ-ভারত। বাংলাদেশ তাকিয়ে আছে ভারতের দিকে। বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে ভারত। তবে এই বাংলাদেশের দিকে দুবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের হেলায় তাকানোর দিন হয়তো শেষ। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স মুগ্ধ করেছে তিন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার, মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন ও কিরণ মোরেকে। মুগ্ধতার পাশাপাশি আছে সতর্কতাও। ভা
রতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে বাংলাদেশকে নিয়ে নিজেদের ভাবনাটা জানিয়েছেন সাবেক এই তিন ক্রিকেটার— যেভাবে বাংলাদেশ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের মতো দলের সঙ্গে লড়াই করেছে, সেটা প্রশংসার দাবিদার। চোটের কারণে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওদের নিয়মিত পাঁচ বোলার খেলেনি। তাতেই ভুগেছে নিউজিল্যান্ড। নিয়মিত বোলাররা থাকলে এ দলটি আরও ভয়ংকর। ওদের ব্যাটসম্যানরা খুব ভালো। মাহমুদউল্লাহ দুর্দান্ত ফর্মে আছে। সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও সাব্বির রহমানও ধারাবাহিক। প্রতিটি দলেরই কিছু দুর্বলতা আছে৷ বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের সেই দুর্বল দিকটা বোঝা গেছে। তাই বলছি, কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটা মোটেই সহজ হবে না ভারতের৷ গ্রুপ পর্বে আপনি এক ম্যাচ হারলে পরের ম্যাচে ফিরে আসার সুযোগ থাকে। কিন্তু নকআউট পর্বে একটা খারাপ দিনই আপনাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেবে। আমার মনে হয়, ভাগ্য সঙ্গে থাকলে ফর্মের তুঙ্গে থাকা বাংলাদেশ যেকোনো দলকেই হারিয়ে দিতে পারে। তাই বাংলাদেশকে মোটেও হালকাভাবে নেওয়া যাবে না ভারতের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ যে রোমাঞ্চকর ক্রিকেট খেলেছে, তারপর আর কোয়ার্টার ফাইনালে ওদের হালকাভাবে নেওয়া মোটেই ঠিক নয়। আমি যখন অধিনায়ক ছিলাম, তুলনামূলক ছোট দলগুলোর সঙ্গেই বেশি সতর্ক থাকার চেষ্টা করতাম। ছেলেদের মনে করিয়ে দিতাম, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছোট প্রতিপক্ষ বলে কেউ নেই। তাদের হারানোর কিছু থাকে না, থাকে সবকিছুই জয় করার। তারা জানে এই ধরনের ম্যাচ জিততে পারলে নায়ক হয়ে যাবে। সে কারণেই মরণকামড় দেওয়ার জন্য বেশি মরিয়া থাকে। নিউজিল্যান্ডের পেস আক্রমণ এই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা। তার ওপর ম্যাচটা ওরা খেলেছে নিজের দেশে যেখানে বল ভালো সুইং, সিম করে। সেই বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে বাংলাদেশ ২৮৮ তুলেছে। মাহমুদউল্লাহ পরপর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছে, যেটা বিশ্বকাপে খুব কম ব্যাটসম্যানই করতে পেরেছে। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কঠিন পরিবেশেও বাংলাদেশ ঘাবড়ে যায়নি। বুঝিয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় ‘ফ্লুক’ ছিল না। আর বিশ্বকাপে ভারতের কাঁটা হওয়ার ইতিহাসও আছে বাংলাদেশের। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে ওই ম্যাচটা হেরেই তো বিদায় নিয়েছিল ভারত। কোয়ার্টার ফাইনালে ছোট দল বলে কিছু নেই। যে দলটা শেষ আটে উঠে এসেছে, বুঝতে হবে তাদের সামর্থ্য আছে বলেই তারা এ পর্যন্ত এসেছে। মানসিকভাবে তারা এখন আরও শক্তিশালী থাকবে। অবশ্যই র্যাঙ্কিংয়ে ভারত এগিয়ে, বিশ্বকাপে খেলছেও খুব ভালো। কিন্তু নিজেদের দিনে যেকোনো দল জিততে পারে। বাংলাদেশও এ মুহূর্তে খুব ভালো ক্রিকেট খেলছে। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং—সব বিভাগেই ওরা ভালো করছে। তবে এই ম্যাচে তাদের ওপরও চাপ থাকবে, কারণ ভারত শিরোপার অন্যতম দাবিদার। এখন সেই চাপ বাংলাদেশ কতটা নিতে পারে সেটাই দেখার বিষয়। একজন ভারতীয় হিসেবে, আমি মনে করি ভারতের এ ম্যাচটা জেতা উচিত। তবে বাংলাদেশ খুব ভালো ক্রিকেট খেলছে বলেই বাড়তি সতর্কতা। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, এবেলা, পিটিআই।
No comments:
Post a Comment