Tuesday, May 5, 2015

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য কোম্পানি হচ্ছে:প্রথম অালো

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আইন ২০১৫-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে সরকার। এ আইনের আওতায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার জন্য ভেটিং সাপেক্ষে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার কোম্পানি অব বাংলাদেশ’ গঠনের প্রস্তাবও চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাং
বাদিকদের ব্রিফ করেন৷ আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, এ ধরনের উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন এবং নিরাপত্তাসংবলিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য আলাদা কোম্পানি গঠন করতে হয়। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আইনের খসড়ায়ও এ ধরনের কোম্পানি করার কথা বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, পাবনার ঈশ্বরদীতে ২০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকানা থাকবে বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের হাতে। আর কেন্দ্রটি পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার কোম্পানি অব বাংলাদেশ’-এর হাতে। প্রকল্পের যিনি শেষ পরিচালক থাকবেন, তিনি হবেন নতুন কোম্পানির প্রথম ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এই কেন্দ্র স্থাপনের জন্য দুই বছর ধরে প্রকল্প এলাকায় সমীক্ষা চলবে; যার এক বছর ইতিমধ্যে পার হয়েছে। এ সমীক্ষা-ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৮৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নীতিমালা মেনেই এ বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে। রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করার সময়ই নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। রাশিয়াই পারমাণবিক বর্জ্য নিয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ২০১০ সালে সংসদে প্রস্তাব পাস করা হয়, গঠন করা হয় একটি জাতীয় কমিটি। ওই বছরই রাশিয়ার সঙ্গে একটি কাঠামো চুক্তি করে সরকার এবং ২০১১ সালের নভেম্বরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে দুই দেশ চুক্তি করে। ২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুরে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই ইউনিটে ২০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২১ সালের মধ্যে চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে সরকার। গতকালের বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নৌ রুট বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ নৌপরিবহনসচিব শফিক আলম মেহেদী ও ভারতের নৌসচিব রাজীব কুমার গত ২০ এপ্রিল এ চুক্তিতে অনুমোদন করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আশা প্রকাশ করে বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরে এ বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কবে আসবেন, তা ঠিক হয়নি। মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা জানান, এ চুক্তির ফলে বাংলাদেশের পণ্যবাহী জাহাজ ভারতে এবং ভারতের পণ্যবাহী জাহাজ বাংলাদেশে—উভয় দেশের নৌ রুট ব্যবহার করতে পারবে। দুই দেশের পণ্যবাহী জাহাজ সমান সুবিধা পাবে। তবে, যুদ্ধ জাহাজ, বিজ্ঞান বা সমুদ্রবিষয়ক গবেষণার নৌযান এ চুক্তির আওতাভুক্ত হবে না। সচিব জানান, দুই দেশের পণ্যবাহী জাহাজগুলো গন্তব্যে পৌঁছাতে এখন সময় লাগে ১৪ দিন। এ চুক্তি হলে তখন সময় লাগবে চার থেকে পাঁচ দিন। এতে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে। চুক্তি বাস্তবায়নে অপারেটিং রূপরেখা তৈরির কাজও শিগগিরই সম্পন্ন হবে। এ চুক্তির মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। যেকোনো পক্ষ ছয় মাসের নোটিশে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যেতে পারবে। চুক্তিটি পর্যালোচনার জন্য একটি যৌথ নৌপরিবহন কমিটি থাকবে। গতকালের বৈঠকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর ১১ থেকে ১৩ মার্চ গ্রানাডায় ‘ব্লু গ্রোথ ও ফুড সিকিউরিটি’র লক্ষ্যে গ্লোবাল অ্যাকশন নেটওয়ার্কের জন্য কৌশলগত বৈঠকে যোগদান সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়।

No comments:

Post a Comment