Thursday, May 14, 2015

সম্পর্ক দৃঢ় করতে মোদির চীন সফর শুরু আজ:প্রথম অালো

চীন সফর শুরুর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানালেন, তাঁর এই সফর ভারত ও চীনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে তুলবে। মোদি আজ বৃহস্পতিবার চীন রওনা হচ্ছেন। তিন দিন চীনে কাটিয়ে তিনি যাবেন মঙ্গোলিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া। মোদি প্রথমে যাবেন শিয়াং। এখান থেকেই প্রাচীন ‘সিল্ক রুটের’ সূত্রপাত। তা ছাড়া শিয়াংয়েই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আদি বাড়ি। চীনের সাংবাদিকদের সঙ্গে মোদি গতকাল বুধবার
দিল্লিতে অনেকক্ষণ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বলেন, চীনে যাওয়ার জন্য তিনি সাগ্রহে অপেক্ষা করছেন। এই সফর শুধু ভারত-চীন সম্পর্ককেই এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে তা-ই নয়, তা এশিয়া ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষেত্রে একটা মাইলফলক হয়ে থাকবে। চীনা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মোদি বলেন, এই সফরের জন্য তিনি এক বছর ধরে অপেক্ষা করেছেন। একবিংশ শতক হবে সম্পূর্ণভাবেই এশিয়ার। চীনের সঙ্গে ভারতের যে বিরোধ রয়েছে, তার উল্লেখ করে মোদি বলেন, ধৈর্য ও বিচক্ষণতার সঙ্গে সেই বিরোধগুলোর মোকাবিলা করা হয়েছে। এবং এর ফলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভূত উন্নতি হয়েছে। এই আলাপের পর মোদি একাধিক টুইট করেন। একটিতে তিনি বলেন, ‘চীনা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বললাম। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতির বিপুল সম্ভাবনার ওপর জোর দিলাম।’ আরেক টুইটে তিনি লেখেন, ‘এশিয়া ভগবান বুদ্ধের দেশ। এশিয়ারই দায়িত্ব এটা দেখা যে, এই শতক যেন যুদ্ধে বিদীর্ণ না হয়।’ গত এক বছরে মোদি চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিনবার মিলিত হলেও চীন যাচ্ছেন তাঁর সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তির আগ মুহূর্তে। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে গিয়েছেন। চীনা প্রেসিডেন্টও এই সময়ে ভারত সফরে এসেছেন। এই ঘনিষ্ঠতা সত্ত্বেও মোদির সফরের আগে দুই দেশের মধ্যে একটা চাপা উত্তেজনা রয়েছে। সফরের ঠিক আগেই চীন পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে এক অর্থনৈতিক করিডর তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে দেয়। পাশাপাশি চীন সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন সংবাদপত্রে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী যেন সীমান্ত বিরোধের বিষয় ভুলে না যান। অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে চীনের মানুষদের ভাবাবেগকে যেন গুরুত্ব দেন। শীর্ষ পর্যায়ের সফরের আগে এই ধরনের চাপের কূটনীতি চীন অবশ্য বারবার করে আসছে। প্রেসিডেন্ট শির সফরের আগে কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে তারা ভারতকে চাপে রেখেছিল। এবারও তারা পাকিস্তানের জন্য অর্থনৈতিক করিডর তৈরির প্রস্তাব রেখে চাপ সৃষ্টি করেছে। অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে তাদের দাবি তো আছেই। এই অঞ্চলের অবকাঠামোর উন্নতিতে ভারতের পরিকল্পনাও চীন ভালো চোখে দেখছে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতের বিপুল বাজার ও চীনের উদ্বৃত্ত সম্পদকে দুই দেশের কেউই উপেক্ষা করতে পারে না। বিবাদকে পাশে ঠেলে এই অর্থনৈতিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে এগোনোই এখন দুই দেশের মন্ত্র। মোদিও গতকাল চীনা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সেটাই বুঝিয়েছেন।

No comments:

Post a Comment