টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পেট্রলের আগুনে তিন মেয়েসহ মাকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. শাহাদত হোসেনের আদালতে ১৬৪ ধারায় এই জবানবন্দি দেন জাহাঙ্গীর। বেলা দুইটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা এই জবানবন্দি দেন তিনি। এর আগে তাঁকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হা
সপাতাল থেকে আদালতে নেওয়া হয়। হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শ্যামল কুমার দত্ত বলেন, জাহাঙ্গীর ১২ পৃষ্ঠার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করেন। পুলিশের ভাষ্য, স্বীকারোক্তিতে জাহাঙ্গীর জানান, ওই মা তাঁর মেয়ে মনিরাকে বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। তিন মেয়েসহ মাকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় তিনি মির্জাপুরের একটি ফিলিং স্টেশন থেকে ৫০ লিটার তেল নেন। তেল নিতে রিকশাচালক আলী হোসেনের রিকশা ভাড়া করেন তিনি। পুলিশের আরও ভাষ্য, জাহাঙ্গীর বলেছেন, বাড়িতে আগুন দিতে তাঁকে কেউ প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা না করলেও এ কাজে আরও দুজন উসকানি দেন। তবে তাঁদের নাম জানাননি তিনি। গত শনিবার রাত আটটার দিকে জাহাঙ্গীর পাগলের বেশে তাঁর বাড়ি গেলে বাড়িটিতে পাহারারত গ্রাম পুলিশ আওলাদ হোসেন ও কনস্টেবল কাজী নুরুল ইসলাম তাঁকে ধরে ফেলেন। পরে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশিদ তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যান। কিন্তু তিনি অসুস্থ থাকায় পরদিন রোববার তাঁকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসা শেষে গতকাল আদালতে হাজির করা হয় তাঁকে। এর আগে গত ১৮ অক্টোবর জাহাঙ্গীরের গ্রেপ্তার হওয়া চাচাতো ভাই নূর মোহাম্মদ টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম এ বি এম আশরাফুল হকের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলায় জাহাঙ্গীর ছাড়াও এজাহারভুক্ত চারজনসহ মোট ১৮ জন এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন। পুলিশ সুপার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের নির্দেশে জাহাঙ্গীরকে টাঙ্গাইল জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
No comments:
Post a Comment