Wednesday, May 6, 2015

এসএনপির জোয়ার নিয়ে উদ্বিগ্ন ইংল্যান্ড:প্রথম অালো

যুক্তরাজ্যের এবারের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বড় রকমের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বড় দলগুলোর জনপ্রিয়তা হ্রাসের পাশাপাশি পার্লামেন্টে প্রভাবশালী আঞ্চলিক দল স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (এসএনপি) জোরালো অবস্থানের আভাসের পরিপ্রেক্ষিতে এই উদ্বেগ। ১৯৩৪ সালে স্বাধীন স্কটল্যান্ড প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে এসএনপি। ২০১১ সালে দলটি স্কটল্যান্ডের প্রাদেশিক পরিষদে প্রথমবারের মতো একক সংখ্যাগরিষ
্ঠতা পায়। এরপর তাদের অঙ্গীকারমতো ২০১৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রশ্নে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। ওই গণভোটে মাত্র ৪ শতাংশের ব্যবধানে (‘হ্যাঁ’ ৪৫ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ‘না’ ৫৫ দশমিক ৩ শতাংশ) আটকে যায় স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা। কিন্তু ওই গণভোট পাল্টে দেয় স্কটল্যান্ডের রাজনীতির চিত্র। ২০১০ সালে স্কটল্যান্ডের মোট ৫৯টি সংসদীয় আসনে লেবার পার্টি জয়ী হয় ৪১ আসনে। এসএনপি পেয়েছিল মাত্র ছয়টি আসন। কিন্তু গত বছরের গণভোটের পর এসএনপির জনপ্রিয়তা এতটা বেড়েছে যে এবার তারা ৫০টির বেশি আসন পেতে পারে বলে আভাস দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধান দুটি দল কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টির জনপ্রিয়তা অব্যাহতভাবে কমতির দিকে রয়েছে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ৮৯ শতাংশ ভোটার এই দল দুটির কোনো একটিকে ভোট দিয়েছিলেন। ২০১০ সালে এসে সেই হার ৬৫ শতাংশে নেমে আসে। এই নির্বাচন নিয়ে প্রকাশিত সবগুলো জরিপই বলছে, কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। এ অবস্থায় এসএনপি ও ওয়েলসের প্রাদেশিক দল প্লেইড কামরির মতো প্রাদেশিক দলগুলো কেন্দ্রীয় সরকারে ভাগ বসানোর সুযোগ পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই ওয়েস্টমিনস্টারের রাজনীতিতে একক আধিপত্য বজায় রাখা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইংল্যান্ডের রাজনীতিকেরা। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন তাঁর শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ভোটারদের সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, যুক্তরাজ্যকে ভাঙার চেষ্টারত এসএনপি লেবার দলের কাঁধে চড়ে ক্ষমতায় বসলে দেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে। তবে লেবার পার্টির নেতা এড মিলিব্যান্ড এসএনপির সঙ্গে কোনো প্রকারের জোট বা চুক্তির সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, এসএনপি-আতঙ্ক ছড়িয়ে ক্যামেরন ভোটারদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। লিবারেল ডেমোক্র্যাটস এবং ইউকিপও এসএনপির সঙ্গে জোটের বিরোধী। যুক্তরাজ্যের ঐক্য আর ইংল্যান্ডের আধিপত্যের কথা চিন্তা করে এই নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতির ইতি ঘটতে পারেও বলে মনে করছেন কেউ কেউ। বর্তমানে আসনভিত্তিক সরাসরি নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া প্রার্থী নির্বাচিত হন। আর পার্লামেন্টের মোট ৬৫০টি আসনের মধ্যে সরকার গঠন করতে লাগে ৩২৬ আসন।

No comments:

Post a Comment