নির্বাচনের ডামাডোলের মধ্যেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতায় বিভিন্ন সড়ক, ফুটপাত ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যেটি অনুমোদনের জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উত্থাপন করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণের চেয়ে
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই এলাকায় রয়েছে কূটনৈতিক পাড়া। এই প্রকল্পের আওতায় মূলত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার সড়ক, ফুটপাত ও নর্দমা উন্নয়ন করা হবে, যাতে করে জলাবদ্ধতা দূর করা যায়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের আওতায় বনানী লেকের দূষণ নিরসনে বিকল্প ড্রেনেজ লাইন নির্মাণ করা হবে। এদিকে সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরনের প্রকল্প অনুমোদনের উদ্যোগকে বাঁকা চোখে দেখছেন বিশ্লেষকরা। সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা ২০১০-এ বলা আছে, নির্বাচনের সময় সংশ্লিষ্ট এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নে কোনো প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া যাবে না। একই সঙ্গে কোনো অর্থ ছাড় করা যাবে না। আচরণ বিধিমালার ১৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, 'নির্বাচনপূর্ব সময়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র বা কাউন্সিলর বা অন্য কোনো পদাধিকারী সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন এলাকায় উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন বা ইতিপূর্বে অনুমোদিত কোনো প্রকল্পে অর্থ অবমুক্ত বা প্রদান করিতে পারিবেন না।' এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এ ধরনের উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। সরকার এটি অনুমোদন না করলেও করতে পারত।' জানা যায়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন থেকে পরিকল্পনা কমিশনে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল নির্বাচনকালীন সময়ে কোনো ধরনের প্রকল্প অনুমোদন না দিতে। একই সঙ্গে অর্থ ছাড় না করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এদিকে পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওপরের নির্দেশনার আলোকে তাঁরা প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য পাঠাচ্ছেন। এর মাধ্যমে নির্বাচনে কোনো ধরনের আচরণ লঙ্ঘনের বিষয়টি তাঁরা জানেন না বলেও মন্তব্য করেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব জেসমিন টুলি গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, সিটি নির্বাচনের সময় উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন ও পুরনো প্রকল্পে অর্থ ছাড় না করতে ইতিমধ্যে পাঁচটি মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ও রয়েছে বলে জানান তিনি। স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তরে গুলশান, বনানী ও বারিধারায় বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, আন্তর্জাতিক অফিস ও অন্যান্য দেশি-বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ অফিস রয়েছে। ওই সব এলাকার সড়ক, ফুটপাত ও ড্রেনেজের অবস্থা অত্যন্ত করুণ। এ কারণে ওই সব এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নে এই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।
No comments:
Post a Comment